একক পর্যটন ভিসা চালু করছে জিসিসি: এক আবেদনে ৬ আরব দেশ ভ্রমণের সুযোগ

দীর্ঘ পরিকল্পনা ও সমন্বিত প্রচেষ্টার পর উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) অবশেষে একক পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। এই ‘জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা’ চালু হলে ভ্রমণকারীরা একবার আবেদন করেই জোটের অন্তর্ভুক্ত ছয়টি দেশ—সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান—ভ্রমণ করতে পারবেন। আগামী বছর এই ভিসা চালু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বাহরাইনের রাজধানী মানামায় গালফ গেটওয়ে ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে বক্তৃতাকালে সৌদির পর্যটনমন্ত্রী বলেন, চার বছর ধরে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার পর এই উদ্যোগটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে পৌঁছেছে।

আহমেদ আল-খাতিব উল্লেখ করেন, আঞ্চলিক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, আধুনিক অবকাঠামো ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে জিসিসি বর্তমানে পর্যটন খাতে এক ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জিসিসি দেশগুলো এখন এমন এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের সাক্ষী হচ্ছে, যেখানে পর্যটন খাত বর্তমানে তেল ও বাণিজ্যের পাশাপাশি এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্তম্ভে পরিণত হয়েছে। এই অঞ্চলের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে জিসিসি এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন গন্তব্যস্থলগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা’ নামের এই ইউনিফাইড এন্ট্রি পারমিট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শেনজেন ভিসার আদলে তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওমানে অনুষ্ঠিত জিসিসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

  • অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য: জিসিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ভিসা উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য পরিকল্পনার একটি মূল অংশ; যা এমন আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে, যারা বারবার কাগজপত্র, পৃথক ফি এবং বিভিন্ন প্রবেশের নিয়ম ছাড়াই একাধিক দেশ ভ্রমণ করতে চান।
  • মেয়াদ ও উদ্দেশ্য: প্রাথমিকভাবে এই ভিসা শুধু পর্যটন ও পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে। ভ্রমণকারীরা চাইলে একক দেশ বা ছয়টি দেশই বেছে নিতে পারবেন; যার মেয়াদ এক থেকে তিন মাসের মধ্যে হতে পারে। এতে পৃথক ভিসার তুলনায় খরচও কম হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ভিসা চালুর পর আবেদন প্রক্রিয়াও সহজ হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন:

  • আবেদন মাধ্যম: ভিসা শুধু অনলাইনে একটি অফিসিয়াল অনলাইন পোর্টালে মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
  • প্রয়োজনীয় নথি: আবেদনকারীদের কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট, আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা ও আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার বা পরবর্তী গন্তব্যের টিকিট জমা দিতে হবে।
  • প্রাপ্তি: আবেদনকারীরা প্রয়োজনীয় নথি আপলোড, ফি প্রদানের পর ইমেলের মাধ্যমে তাদের ডিজিটাল প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top