গত ১০ অক্টোবর মার্কিন-মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার গানশিপ ও আর্টিলারি ফায়ার ব্যবহার করে আক্রমণ চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মারওয়ান বারগুতিকে ইসরায়েলি কারারক্ষীরা মারাত্মকভাবে প্রহার করায় তাঁর শারীরিক অবস্থা “বিধ্বস্ত” হয়ে গেছে বলে তাঁর ছেলে জানিয়েছেন।
গাজায় অব্যাহত আক্রমণ ও হতাহতের সংখ্যা
সাম্প্রতিক হামলাগুলো যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলি হামলার ফলে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল ট্যাংক ও ড্রোনের মাধ্যমে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০,১২৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭১,০১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।
শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
ইউনিসেফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে: “একটি যুদ্ধবিরতি অবশ্যই শিশুদের জন্য সত্যিকারের নিরাপত্তায় রূপান্তরিত হতে হবে, আরও ক্ষয়ক্ষতিতে নয়।” সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, “প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার আছে। শিশু হত্যা এখনই বন্ধ করতে হবে।”
ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ফাতাহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা মারওয়ান বারগুতি, যিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি, তাঁর ওপর নির্মম প্রহারের ঘটনায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলে তাঁর ছেলে জানান। তিনি বলেন, বারগুতি এখন “শারীরিকভাবে চূর্ণবিচূর্ণ”।
ইসরায়েলের সামরিক বাজেট বৃদ্ধি
চলমান সংঘাতের আবহে ইসরায়েল আগামী বছরের জন্য সামরিক বাজেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাজেট আগের খসড়া বাজেটে নির্ধারিত ২৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩৪ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সামরিক বাজেট বাড়ানোর পক্ষে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অঙ্গীকার করেছেন যে, তারা “প্রতিটি ফ্রন্টে ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।” বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান যুদ্ধ, সামরিক মোতায়েন এবং অস্ত্র সংগ্রহের খরচ বৃদ্ধির কারণেই এই প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র- আলজাজিরা







