প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বেলা আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ঘোষণা করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। চারটি মৌলিক বিষয় নিয়ে একটি মাত্র প্রশ্নে জনমত যাচাই হবে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পেলে বাংলাদেশের সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট – নিম্নকক্ষের পাশাপাশি দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে।
ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে আমরা একটি জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।” তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ৯ মাসের আলোচনায় ৩০টি সাংবিধানিক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রায় পূর্ণ ঐকমত্য হয়েছে। বাকি কয়েকটি বিষয়েও মৌলিক দ্বিমত নেই, শুধু বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে পার্থক্য।
গণভোটের একমাত্র প্রশ্নটি হবে:
“আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং সনদে উল্লেখিত নিম্নোক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর প্রতি সম্মতি দিচ্ছেন?”
(ক) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন
(খ) দ্বিকক্ষ সংসদ ও উচ্চকক্ষের ভেটো ক্ষমতা
(গ) নারী প্রতিনিধিত্ব, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমা, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি ৩০টি ঐকমত্যের প্রস্তাব
(ঘ) অন্যান্য সংস্কার
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পেলে নির্বাচিত সংসদই সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে এবং ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান:
– আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শিগগিরই প্রথম রায় দেবে, গুমের বিচারও শুরু হয়েছে।
– অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, এফডিআই ১৯.১৩% বেড়েছে।
– আগামী সপ্তাহে মায়ার্স্কের সঙ্গে লালদিয়া গ্রিন পোর্টে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে।
শেষে তিনি আহ্বান জানান, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে ঐক্য গড়েছিলাম, তা যেন লঘু বিবাদে ভেঙে না যায়। আসুন নতুন বাংলাদেশ গড়ি।”







