নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক সমাজতান্ত্রিক পার্টি (DSA) এর নেতা জোহরান মামদানি ঐতিহাসিক জয় অর্জন করেছেন। উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী এবং ভারতীয় মুসলিম বংশোদ্ভূত এই ৩৩ বছর বয়সী নেতা, যিনি নিউ ইয়র্কের স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য ছিলেন, প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে (স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে) পরাজিত করে আমেরিকার সবচেয়ে বড় শহরের নতুন মেয়র হয়ে উঠেছেন। এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক জয় নয়, বরং দক্ষিণ এশীয় এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি মাইলফলক।
মামদানির জয় ঘোষণার পর তিনি তার বিজয়ী বক্তৃতায় বলেন, “নিউ ইয়র্ক শহর দেখাবে কীভাবে আমরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি। আমি জানি আপনি দেখছেন… এখান থেকে আমরা পরিবর্তন শুরু করব।” এই বক্তব্যটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় নির্বাচনী পরীক্ষায় ডেমোক্র্যাটদের বড় জয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নির্বাচনের ফলাফল এবং প্রচারণার হাইলাইটস
সিএনএন এবং এনবিসি নিউজের লাইভ আপডেট অনুসারে, মামদানি প্রায় ৫০.৪% ভোট পেয়ে কুয়োমোর ৪১.৬% ভোটকে ছাড়িয়ে গেছেন। এই নির্বাচনটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা নিউ জার্সি গভর্নর পদসহ অন্যান্য রাজ্যে জয়লাভ করেছে। মামদানির প্রচারণা মূলত সাশ্রয়ী আবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক ন্যায়ের উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার শাসনামলে নিউ ইয়র্ককে “সকলের জন্য ন্যায়সঙ্গত শহর” বানানো হবে।
জোহরান মামদানি ১৯৯১ সালে উগান্ডায় জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু তার পরিবার ভারতীয় মুসলিম। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে নিউ ইয়র্কে র্যাপার এবং অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০২০ সালে স্টেট অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হয়ে তিনি DSA-এর একজন প্রমুখ নেতা হয়ে ওঠেন। এই জয় তাকে নিউ ইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম এবং দক্ষিণ এশীয় মেয়র করে তুলেছে, যা আমেরিকার বৈচিত্র্যময় রাজনীতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
রাজনৈতিক প্রভাব এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
এই জয়টি ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি বড় বুস্ট, বিশেষ করে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে। অ্যাল জাজিরার লাইভ কভারেজে বলা হয়েছে, “মামদানির বিজয় আমেরিকান রাজনীতিতে একটি ঝড় তুলেছে।” প্রাক্তন গভর্নর কুয়োমো, যিনি তার পুরনো কেলেঙ্কারির কারণে সমালোচিত ছিলেন, এই পরাজয়ে তার রাজনৈতিক পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন শেষ হয়েছে।
মামদানির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ১ জানুয়ারি ২০২৬-এ অনুষ্ঠিত হবে।







