নিজ দেশে বিশ্বের সেরা মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে ভিসা ফি বাতিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমারের সরকার এই বিষয়ে নীতিগত আলোচনা শুরু করেছে, যা ব্রিটিশ ভিসা প্রক্রিয়ায় একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা।
কারণ ও লক্ষ্য
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সরকার বিশ্বের শীর্ষ বৈজ্ঞানিক, একাডেমিক ও ডিজিটাল বিশেষজ্ঞদের যুক্তরাজ্যে আনতে ভিসা ফি পুরোপুরি বাতিল করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে। সরকারের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট টাস্কফোর্স‘ এই নীতির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, এটি মূলত প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতি এবং নতুন করে ব্যয়বহুল ভিসার প্রনোদনার বিপরীতে যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এইচ-১বি ভিসার নতুন আবেদনকারীদের জন্য ১ লাখ ডলার ফি নির্ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের এই প্রস্তাবিত ভিসা ফি ছাড়ের পরিকল্পনা আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
কারা এই সুবিধার আওতায় আসবেন?
এই নতুন নীতি বাস্তবায়িত হলে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এই ভিসা ফি ছাড়ের আওতায় আসবেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা’র আবেদন ফি ৭৬৬ পাউন্ড (প্রায় ১০৩০ মার্কিন ডলার), যা আবেদনকারীর স্বামী/স্ত্রী এবং সন্তানদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে এই অর্থ পরিশোধের প্রয়োজন হবে না।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপট
এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সিদ্ধান্ত আগামী নভেম্বরে ঘোষণা করা হতে পারে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, বিশ্বের সেরা মেধাবীদের জন্য ভিসা ফি বাতিলের পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতিতে নতুন উদ্দীপনা আনতে পারে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় যুক্তরাজ্যকে আরও এগিয়ে রাখবে। এটি কেবল আর্থিক ছাড় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে মেধার প্রতি যুক্তরাজ্যের সম্মান ও আগ্রহের একটি স্পষ্ট বার্তা। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ সরকার তাদের অভিবাসন নীতির একটি নতুন উদার দিক তুলে ধরছে, যা বৈশ্বিক প্রতিভার আকর্ষণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।