ভোটের আগে জনগণের আস্থা অর্জনে আগ্রহী বিএনপি: তারেক রহমান

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করাই দলের প্রধান দায়িত্ব বলে মনে করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ফেসবুক পোস্টে এই কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি দলের কৌশল, সংস্কার এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব: আস্থা অর্জনের কৌশল

পোস্টে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি, তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও মজবুত করা হচ্ছে। এই সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান।

জবাবদিহিতা ও শৃঙ্খলা

তিনি জানান, নানা অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ৭,০০০-এরও বেশি দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এবং অসদাচরণের অভিযোগে অনেককে পদচ্যুত বা বহিষ্কার করা হয়েছে। তারেক রহমান বলেন, “এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, তবে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এগুলো ছিল অপরিহার্য। শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়; বরং সেটিই আমাদের শক্তি।” এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিএনপি প্রমাণ করতে চায় যে তারা সততার ব্যাপারে আন্তরিক এবং ক্ষমতাসীনদের কাছে তারা যে মানদণ্ড দাবি করে, নিজেদেরও সেই একই মানদণ্ডে দাঁড় করায়।

ভবিষ্যৎমুখী নীতি ও নেতৃত্ব

বিএনপি জনগণের বিশ্বাস পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট, বিশেষত তরুণদের, যারা রাজনীতিকে কেবল ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখতে চায় না। দলের নীতিমালা ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পেয়েছে। তারেক রহমান বলেন, তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরও বেশি নারী, তরুণ নেতা ও পেশাজীবীদের দলে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায়। তিনি বলেন, “আমরা চাই, বিএনপির পরিচয় হোক সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে।”

তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, ভবিষ্যতমুখী এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আলাদা, তাই আমাদের পদক্ষেপগুলোকেও হতে হবে নতুনভাবে চিন্তা-নির্ভর।”

সহকর্মী ও জনগণের প্রতি আহ্বান

পোস্টের শেষে তারেক রহমান তার সহকর্মী ও নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকি, এবং জনগণের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকি। আমি যেমন আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও তেমনি আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ আরও উজ্জ্বল হবে।” তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, একসঙ্গে তারা বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলতে পারবেন।