নেতানিয়াহু কাতারে হামলা করে কার্যত বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো

কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আল জাজিরার কলামিস্ট বেলেন ফার্নান্দেজ তার এক মতামতধর্মী লেখায় এই হামলাকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর “বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এই হামলা ও অন্যান্য সামরিক কর্মকাণ্ডকে তিনি ইসরায়েল সরকারের বেপরোয়া মনোভাব এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির প্রতি অবজ্ঞার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

আল জাজিরার ওই নিবন্ধ অনুযায়ী, কাতারের ওপর হামলাটি ছিল একটি বড় ধরনের ভুল পদক্ষেপ। কাতার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর বৃহত্তম ঘাঁটিগুলোর একটির হোস্টও এটি। এমন একটি দেশের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে, এমনকি যুক্তরাজ্যের মতো ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যেও, নিন্দা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ভারত এবং ফ্রান্সও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

লেখক মনে করেন, নেতানিয়াহু যখন “যারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়” এমন সব দেশকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দেন, তখন তিনি কার্যত সব দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দেন। এটি ইসরায়েলের ‘দীর্ঘ বাহু’ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ। এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েলকে কূটনৈতিকভাবে বন্ধুহীন করে তুলছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই হামলার পর তাৎক্ষণিক কোনো জোরালো নিন্দা আসেনি। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া আসে, যেখানে সরাসরি নিন্দা জানানো থেকে বিরত থাকা হয়। এই নীরবতা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করছে বলে মনে করা হয়।

বেলেন ফার্নান্দেজ তার লেখায় এই হামলার ঘটনাকে এমন সব মানুষের জন্য একটি “সতর্কবার্তা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যারা এখনো ইসরায়েলের “ন্যায়বিচার” ধারণায় বিশ্বাস করেন। তিনি মনে করেন, নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ ইসরায়েলকে বিশ্ব থেকে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।

সূত্র- আলজাজিরা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top