ক্ষমতা হারানোর জন্য ভারতকে দায়ী করলেন কেপি শর্মা অলি

নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি তার প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর জন্য সরাসরি ভারতকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানোই তার পতনের কারণ। গতকাল জেন-জি’র বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করার পর গুঞ্জন উঠেছিল যে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে নেপালি সংবাদমাধ্যম খবর হাব জানিয়েছে, অলি নেপালের শিবপুরী এলাকাতে সামরিক বাহিনীর সুরক্ষায় রয়েছেন এবং সেখান থেকেই তার এই বক্তব্য এসেছে।

আজ নিজ দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে কেপি শর্মা অলি বলেন, “যদি আমি লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে কথা না বলতাম, তাহলে আমি হয়তো এখনো ক্ষমতায় থাকতাম।”

লিপুলেখ ও রামের জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক

লিপুলেখ গিরিপথ: অলি তার পতনের কারণ হিসেবে ভারত ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান লিপুলেখ গিরিপথকে কেন্দ্র করে চলমান সীমান্ত বিরোধের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মহাকালী নদীর পূর্ব দিকের লিম্পিয়াধুড়া, লিপুলেখ এবং কালাপানি নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

রামের জন্মস্থান: ২০২০ সালের জুলাইয়ে কেপি শর্মা অলির দেওয়া এক বিতর্কিত মন্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, দেবতা রাম ভারতে নয়, নেপালে জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন, “রামের অযোধ্যা রাজ্য নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত। ভারত আরেকটি ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।”

কেন এই বিতর্কই তার পতনের কারণ?

কেপি শর্মা অলি মনে করেন, এই দুটি স্পর্শকাতর বিষয়ে তিনি ভারতের সঙ্গে যে বিরোধ তৈরি করেছিলেন, তার কারণেই তিনি ক্ষমতা হারিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, অযোধ্যাতে দেবতা রামের জন্ম হয়েছে—ভারতের এই দাবির বিরোধিতা করা এবং লিপুলেখকে নেপালের অংশ বলায় ভারত তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, যা শেষ পর্যন্ত তার পদত্যাগে প্রভাব ফেলে।

তবে তার পদত্যাগের পেছনে সাম্প্রতিক সময়ে নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তীব্র বিক্ষোভকেও অন্যতম মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top