দেশব্যাপী শিশু-কিশোরদের জন্য নির্ধারিত টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি এক মাসের বেশি পিছিয়ে গেছে। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এই টিকাদান কার্যক্রম, যা মূলত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) ব্যবস্থাপক ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের চলমান আন্দোলনের কারণে প্রস্তুতিতে বিলম্ব হওয়ায় টিকাদান কর্মসূচি পিছানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গত বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং রোববার আনুষ্ঠানিক চিঠি জারি করা হবে।
টিকাদান কর্মসূচির বিস্তারিত:
– মোট সময়: ১৮ কর্মদিবস
– প্রথম ধাপ: প্রথম ১০ দিন স্কুলে স্কুলে ক্যাম্প করে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে
– দ্বিতীয় ধাপ: পরবর্তী ৮ দিন স্কুলে অনুপস্থিত শিশুদের টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে
– নিবন্ধন: জন্ম নিবন্ধন সনদ বা বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে
লক্ষ্যমাত্রা:
৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরকে এই টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহায়তায় আনা এক ডোজের এই ইনজেকশন শিশুদের তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে টিকাদান বিলম্বিত হলে শিশুরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঢাকার গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড আক্রান্তের হার বিশ্বের সর্বোচ্চগুলোর একটি – প্রতি লাখে এক হাজারেরও বেশি।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি আদায়ের আন্দোলন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা পদোন্নতি, বেতনস্কেল উন্নয়ন ও চাকরির স্থায়িত্বের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়া বড় ধরনের টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
টাইফয়েড একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যা দূষিত খাদ্য ও পানি থেকে ছড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়ে এই টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে শিশুস্বাস্থ্যের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা দেবে।