গাজা উপত্যকায় চলমান সংকটের মধ্যে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জন মারা গেছেন—যাঁদের মধ্যে অন্তত দুই শিশুও রয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে এক নবজাতক ও একজন শিশুও রয়েছে, যা অপুষ্টি ও খাদ্য অভাবে মৃত্যুতে ইঙ্গিত করছে ।
এই মৃত্যুর ফলে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধা ও অপুষ্টি-সংক্রান্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১৪৭, যাঁদের মধ্যে ৮৮ জন শিশু।
সংকটের স্কেল: পশ্চাদ্ধাবন ও হাসপাতালের চরিত্র
- গাজার হাসপাতালে এমন এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে যে শিশু ফর্মুলার সংকট-এর কারণে দুধ পান করতে পারেননি—দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারটি জানতে পারে, নবজাতকের মা ক্ষুধার্ত হওয়ায় দুধ উৎপাদন হয়নি ।
- এক ডাক্তার নাটকীয়ভাবে উল্লেখ করেন—ভিড়ের ভেতর “walking corpses”রূপে ফুটে উঠছে গাজার অক্সিজেনহীন বাস্তবতা, যখন এমন মানুষ মানেই জীবিত মৃতের মতো।
- হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, সাংবাদিক ও ত্রাণ কর্মীরাও এখন ক্ষুধায় কায়হীন হয়ে পড়ছে; অনেকে কার্যত দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হচ্ছেন না।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সহযোগিতার আহ্বান
- জরুরি খাদ্য সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) সম্প্রতি জানিয়েছে—প্রতিদিন গাজায় দরকার ১০০ খাদ্য ট্রাক, কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৬০ ট্রাক চালানো হচ্ছে, যা মোটেও যথেষ্ট নয়।
- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় শিশুদের ছবির মাধ্যমে “real starvation” প্রমাণিত হয়েছে, এবং বলছেন তারা “food centres” তৈরি করবে—সরকার ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন।
- জনসাধারণ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী “drop in the ocean” হিসেবে বর্ণনা করেছেন সাম্প্রতিক ট্রাক ডেলিভারিকে, যা প্রকৃত প্রয়োজনকে পূরণে অপ্রতুল।
সংকটের কারণ ও মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র
- ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রায় ৯০ % হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে হাসপাতালের ইলেক্ট্রনিক্স, পানিস্রোত, ওষুধ সামগ্রী সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে।
- সংক্রমণ, ডিহাইড্রেশন ও নিউট্রিশনেল রোগে পুড়ছে শিশু ও গর্ভবতী নারীরা; জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এটি “man-made famine” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
- প্রাপ্ত তথ্যে জানানো হয়েছে, এমন খাদ্যতালিকার অভাবে শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি মস্তিষ্ক ক্ষতি ও কগনিটিভ বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সারসংক্ষেপ
- মাত্র ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১৪ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে দুই শিশু অন্তর্ভুক্ত।
- অপুষ্টি-সংক্রান্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৭, যার মধ্যে ৮৮ শিশু।
- শুধু ইমেজ নয়, মানুষের জীবনের সত্য যে “real starvation”—এটি এখন শুধু নিরবতার নয়, বাস্তব কাজের সময় বলে আন্তর্জাতিক নেতারা বলছেন।
- তবে সহায়তার সংকট, নিরাপত্তা-অপ্রয়োজনীয়তা ও বিতরণব্যবস্থার অকার্যকরতায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে দুর্বল মাত্রায়।
সূত্র- আলজাজিরা, রয়টার্স, দ্যা গার্ডিয়ান