ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার (২০ জুলাই) থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে, যার ফলে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রবিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এই তথ্য জানিয়েছে। পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান এই পূর্বাভাস নিশ্চিত করেছেন।
ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারের পানিও বাড়ছে
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে যে, তিস্তা ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা এবং দুধকুমার নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এই নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন তা স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
পাউবো কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময় পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, পাউবোর আশ্বাস
তিস্তার নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করে রবিবার দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, “আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এর ফলে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।”
তবে, পানি বাড়লেও রবিবার দুপুর পর্যন্ত তিস্তার ভাটিতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির তেমন লক্ষণ দেখা যায়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী চতুরা এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, “পানি কিছুটা বাড়ছে, তবে বন্যা হওয়ার মতো বাড়েনি।”
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং এর ফলে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের কিছু ঘরবাড়ি ও কৃষি জমি প্লাবিত হতে পারে। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, এটি হবে স্বল্পমেয়াদী বন্যা। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়লেও বিপদসীমায় পৌঁছানোর কোনো শঙ্কা নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।