দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজ জন্মভূমিতে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। তাঁর এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নেতা-কর্মীদের মাঝে এক অভূতপূর্ব উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এই ক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নেওয়া হচ্ছে বিশাল সব আয়োজন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এই ফেরার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন যে, তাঁরা চান এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি বাংলাদেশের গত ৫৫ বছরের ইতিহাসের সকল দৃষ্টান্তকে ছাড়িয়ে যাক এবং আগামী ৫৫ বছরের জন্যও এক অবিস্মরণীয় নজির হয়ে থাকুক।
তারেক রহমানের এই গুরুত্বপূর্ণ সফর ও অভ্যর্থনা প্রক্রিয়া সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে বিএনপির গঠিত অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধিদলে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সরেজমিন পরিদর্শনে তাঁরা তারেক রহমানের অবতরণের স্থান থেকে শুরু করে তাঁর যাতায়াতের সম্ভাব্য রুটগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।
নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির নিরাপত্তা টিম সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে। লন্ডন থেকে দীর্ঘ সফর শেষে তারেক রহমান দেশে ফিরে প্রথম কোথায় যাবেন, তা নিয়েও রয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সেখানে গিয়ে তাঁর মাকে দেখতে যেতে পারেন। এই সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত পুরো পথে এবং হাসপাতালের আশপাশে তাঁর জন্য সংবর্ধনার উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের কাজ চলছে।
পরিশেষে, ঢাকায় অবস্থানের জন্য তারেক রহমানের বাসস্থানের বিষয়েও বিস্তারিত জানা গেছে। তিনি গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় উঠবেন, যা বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান বাসভবন ‘ফিরোজা’র একেবারেই কাছাকাছি। দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় পর তাঁর এই ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে কেবল বিএনপি নয়, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও এক নতুন মেরুকরণের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এই দিনটিকে একটি জাতীয় উৎসবের মতো উদযাপনের জন্য সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।







