ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে এবং তাকে গ্রেফতারে সমন্বিতভাবে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তদন্তের অগ্রগতি ও অভিযান:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে এবং শনিবার দুপুরে তার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করে তথ্য চেয়ে সহযোগিতা চেয়েছে। ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন যে, প্রধান সন্দেহভাজনের বাসাসহ অন্তত পাঁচটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে তাকে সেসব স্থানে পাওয়া যায়নি। পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিক মোবাইল ফোন ও সিম ব্যবহার করায় তার নিশ্চিত অবস্থান শনাক্ত করা কঠিন হচ্ছে, তবে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শনিবার রাত ৮টায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চিহ্নিত হওয়া সন্দেহভাজন হামলাকারীকে গ্রেফতারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ডিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ কাজ করছে।
হামলাকারীর পরিচয় ও অপরাধের ইতিহাস:
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো সন্দেহভাজন যুবকের নাম ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান। তাঁর বাবার নাম হুমায়ুন কবির এবং গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়। তিনি ঢাকার আদাবর থানার পিসি কালচার হাউজিং এলাকায় বসবাস করতেন। ফয়সাল করিম মাসুদ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সদস্য ছিলেন। তিনি গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরে একটি স্কুল অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। ওই মামলায় ৭ নভেম্বর র্যাব তাকে দুটি বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছিল। পরে অস্ত্র আইনের মামলায় তিনি তিন মাসের মাথায় জামিন পান।
পুরস্কার ঘোষণা ও মামলার প্রস্তুতি:
গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে শনিবার দুপুরে ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ভুক্তভোগীর পরিবার বাদী হয়ে মামলা করবে, তবে তাঁরা হাসপাতালে থাকায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। মামলায় মোটরসাইকেল চালক ও তার পেছনে বসে গুলি করা ব্যক্তিকে আসামি করা হবে।







