জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আটটি দল। গণভোটের সময়সূচি নিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি। এখন থেকে দলগুলো গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নানা ধরনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রচারণা চালাবে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আট দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আব্দুল কাদের।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, তাঁদের পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন পুরোপুরি না হলেও অনেকগুলো আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে বা হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে। তিনি স্বীকার করেন, তাঁরা চেয়েছিলেন গণভোট আগে হোক, কিন্তু সরকার জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট করার ঘোষণা দিয়েছে। তিনি বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এটা মেনে নিয়েছি।”
ড. কাদের আরও জানান, এই গণভোট সফল করার জন্য এবং ‘হ্যাঁ’ ভোট যাতে বিজয় লাভ করতে পারে, সেজন্য তাঁরা জোরেশোরে ক্যাম্পেইন করবেন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে জনগণকে সচেতন করতে র্যালি, গণসংযোগ, মিছিল ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর অবস্থা দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। এছাড়া, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবিও বহাল আছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে, আট দলের পক্ষ থেকে প্রতি আসনে একক প্রার্থী বাছাই ও চূড়ান্ত করার কাজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে। এটি হবে ‘একবাক্স পদ্ধতিতে’ যেখানে এক আসনে একজনের বেশি প্রার্থী থাকবেন না। ড. কাদের বলেন, তাঁরা ঐকমত্যে পৌঁছে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঠিক করতে পারবেন। তবে এখানে কোনো জোটের নাম থাকবে না, বরং তা হবে দেশপ্রেমিক ও ঐক্যের প্রার্থী।
আট দলের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, শুধু প্রার্থী দেওয়াই নয়, আট দলের সমঝোতার প্রার্থী হিসেবে তাঁদের বিজয়ী করার চেষ্টা করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কম সময়ের মধ্যেই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে।
ড. আহমদ আব্দুল কাদের পাঁচ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত সাতটি বিভাগীয় সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস যৌথভাবে পালনের ঘোষণা দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপা’র সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব মোহাম্মদ নিজামুল হক নাঈম।







