চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলি: ১ জন নিহত, এরশাদ উল্লাহসহ গুলিবিদ্ধ ৪

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জনসংযোগের সময় গুলিতে একজন নিহত এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এটি নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যে প্রথম সহিংসতার ঘটনা।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন চালিতাতলী পূর্ব মসজিদের কাছে এই গুলির ঘটনা ঘটে।

হতাহতের বিস্তারিত

  • নিহত: নিহত ব্যক্তির নাম সারোয়ার হোসেন বাবলা। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন এবং ইদানিং নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করতেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
  • আহত: গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ (পায়ে গুলি লেগেছে), ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইরফানুল হক শান্ত (গলায় গুলি লেগেছে), এবং বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত আমিনুল হক ও মর্তুজা হক

ঘটনার বিবরণ ও পুলিশের বক্তব্য

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমীরুল ইসলাম জানান, এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচারে চালিতাতলী এলাকায় এসেছিলেন এবং সেখানেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। তিনি বলেন, “কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন কাদের জানান, হামলাকারীরা বেশ কয়েকজন ছিল এবং প্রায় সাত-আট রাউন্ড গুলি হয়েছে।

নিহত সারোয়ার হোসেন বাবলার ছোটভাই মো. আজিজ জানান, মাগরিবের নামাজের পর লিফলেট বিতরণ শুরু হলে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। তিনি বলেন, “যারা গুলি করেছে তারা জনসংযোগে আসা লোকজনের সাথে মিশে ছিল, বাইরেও ছিল।” তিনি আরও জানান, সন্ত্রাসীরা নোয়া মাইক্রোবাসে করে এসেছিল এবং তাঁর দুই ভাইকে বিভিন্ন সময়ে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতো। তবে কারা হুমকি দিত, সে বিষয়ে তিনি কোনো জবাব দেননি।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক নেতা দাবি করেন, এই ঘটনা বিএনপি বা সহযোগী সংগঠনগুলোর ‘নিজেদের মধ্যে কোনো ঘটনা নয়’

বিএনপির নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব: তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। এর মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।”
  • রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “যারা রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে, এ ঘটনায় তাদের হাত থাকতে পারে।”
  • দাবি: তিনি হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top