যুক্তরাষ্ট্র-চীন সামরিক যোগাযোগ চ্যানেল পুনরায় চালু করতে সম্মত: সংঘাত নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ

সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ন্ত্রণ এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে সামরিক পর্যায়ের যোগাযোগ চ্যানেলগুলো পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। শনিবার (১ নভেম্বর) মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত এক আঞ্চলিক সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠকে দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের আলোচনায় এই গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা হয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দং জুনের সঙ্গে তাঁর বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি নিশ্চিত করেন, দুই পক্ষ সামরিক যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে একমত হয়েছে।

হেগসেথ বলেন:

“শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সুসম্পর্কই আমাদের দুই শক্তিশালী দেশের জন্য সেরা পথ বলে আমরা একমত।”

  • ভুল বোঝাবুঝি নিরসন: হেগসেথ আরও বলেছেন, এই সামরিক সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্য হলো সম্ভাব্য ভুল বোঝাবুঝি বা সংঘাতের পরিস্থিতি প্রশমন করা। এই চ্যানেল অতীতে কার্যকর থাকলেও বিভিন্ন সময়ে অচল হয়ে পড়েছিল। এ বিষয়ে আরও বৈঠক শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে।

চীনের প্রতিক্রিয়া ও শর্ত

বেইজিং থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও, চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বৈঠকের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছে।

  • আস্থা ও স্থিতিশীলতা: বিবৃতিতে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দং জুন দুই দেশকে নীতিগত স্তরে সংলাপ জোরদার করে আস্থা বাড়াতে এবং অনিশ্চয়তা দূর করতে বলেছেন।
  • শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান: তিনি সমতা, পারস্পরিক সম্মান এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

প্রাসঙ্গিক তথ্য: পূর্বের উত্তেজনা ও তাইওয়ান

  • প্রেসিডেন্টদের বৈঠক: এর ঠিক একদিন আগেই দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা দুই দেশের সম্পর্কের শীতলতা কমানোর ইঙ্গিত দেয়।
  • সামরিক প্রস্তুতি: চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ মন্তব্য করেছিলেন যে চীন এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছিল।
  • তাইওয়ান বিতর্ক: তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা দীর্ঘদিনের। বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ মনে করে এবং সেখানে বিদেশি যোগাযোগের বিরোধিতা করে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় সমর্থক ও অস্ত্র বিক্রেতা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top