রিজার্ভ বৃদ্ধি ‘প্রশংসনীয়’, তবে বিনিময় হার নীতির পর্যালোচনা করবে আইএমএফ

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করেছে, তা দেশের বিনিময় হার (Exchange Rate) ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা তারা পর্যালোচনা করে দেখবে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) হংকংয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপপরিচালক টমাস হেলব্লিং সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

আইএমএফের প্রশংসা ও লক্ষ্য পূরণ

টমাস হেলব্লিং জানান, রিজার্ভ বৃদ্ধি ছিল আইএমএফ সমর্থিত কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, “চলমান বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতির মধ্যেও বাংলাদেশ সেই লক্ষ্য পূরণে সাফল্য দেখিয়েছে, যা প্রশংসনীয়।”

  • রিজার্ভের তথ্য: আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এক বছর আগের ১৯.৯৩ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি

হেলব্লিং আরও জানান, আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল চলতি মাসেই বাংলাদেশ সফরে আসবে। এই সফরকালে সংস্থাটি বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চলমান ঋণ কর্মসূচির পঞ্চম পর্যালোচনা করবে।

রিজার্ভ বৃদ্ধির মূল কারণসমূহ

আইএমএফের মতে, রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করেছে:

  • প্রবাসী আয় ও রপ্তানি: প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) প্রবাহ বৃদ্ধি এবং রপ্তানি আয়ে ধারাবাহিক উন্নতি।
  • ব্যয় নিয়ন্ত্রণ: দেশের আমদানি ও অন্যান্য বৈদেশিক ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম থাকা।
  • ডলার ক্রয়: বাংলাদেশ ব্যাংকের বাজার থেকে ডলার কেনা।

জানা গেছে, ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। সেই সময় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার বাজারে বিক্রি করে। তবে ২০২৫ সালের মে মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রমতে, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত টাকার মান প্রায় ৪৩ শতাংশ কমেছে। বর্তমান অর্থবছরে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ২.১২ বিলিয়ন ডলার কিনছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top