বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ বহু আলেম-ওলামাকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি এই ঘটনাকে ‘জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন।
দমন-পীড়ন ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকামী শক্তির ওপর ফ্যাসিবাদী সরকারের দমন-পীড়নের কথা জাতি ভুলে যায়নি। তিনি তাঁর দলের নেতাকর্মীদের ওপর হওয়া অত্যাচারের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন:
- “আমাদের প্রায় ৬০ লাখ কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে।”
- “২০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ড ও গুমের শিকার হয়েছেন।”
- তিনি জামায়াতের তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাসেম আলী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অনেক আলেম–ওলামাকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনাকে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিএনপি মহাসচিব দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, দেশের মানুষ একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চায়—যা কোনো বিদেশি শক্তির নিয়ন্ত্রণে নয়, বরং জনগণের ইচ্ছায় পরিচালিত হবে। তিনি পুনরায় ঘোষণা করেন যে, বিএনপি ভবিষ্যতে সব জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে একটি ‘রেইনবো নেশন’ গড়ে তুলবে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নির্বাচন
সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ইতিহাস প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালের বাকশাল শাসনের সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল এবং অনেক সাংবাদিক বেকার হয়ে রাস্তায় ‘হকারি’ করেছিলেন। পরে জিয়াউর রহমানই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, রাজনৈতিক সহিংসতা বা মতানৈক্যকে বড় আকারে বাড়তে না দিয়ে সকলের উচিত নির্বাচনী ট্রেনেই ওঠা। তিনি বলেন, “যদি সঠিক সময়ে নির্বাচন হয়, তাহলেই আমরা প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারব।”







