নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে, কিছু রাজনৈতিক দল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন যেন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত না হয়, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, এমন পদক্ষেপ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেও ঠিক হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

নির্বাচন পেছানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের যে অন্তর্বর্তী সরকার, আমরা তাকে সহযোগিতা দিয়ে, সহযোগিতা করে একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করছি, একটা নির্বাচন যেন করা যায়।” তবে হতাশা প্রকাশ করে তিনি যোগ করেন, “আমি কোনো দলকে দোষারোপ করতে চাই না, কোনো ব্যক্তিগত দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময়ে না হয় তার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না।”

তিনি দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকার দরকার বলে মন্তব্য করেন, কারণ দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা—সবকিছুই ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের ওপর নির্ভর করছে। মির্জা ফখরুল জাতীয় সংস্কার কমিশনকে ধন্যবাদ জানান, যারা পরিবর্তনের পরে অতি অল্প সময়ের মধ্যে কিছু সংস্কারের কাজ শেষ করতে পেরেছেন।

বিএনপির সংস্কারের ধারাবাহিকতা ও ইতিহাস

বিএনপি মহাসচিব দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করেন, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে, তার বেশিরভাগই বিএনপি’র হাত দিয়ে হয়েছে। তিনি বলেন:

  • জিয়াউর রহমানের অবদান: বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করেন।
  • খালেদা জিয়ার অবদান: বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্ট থেকে পার্লামেন্টারি ফর্ম অব গভর্নমেন্ট নিয়ে আসেন। তিনি মেয়েদের লেখাপড়া দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা খরচে করার এবং মহিলা অধিদপ্তর ও চাকরি প্রদানের ব্যবস্থা করেন।

মির্জা ফখরুল ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “অথচ এমনভাবে কথা বলা হয়—বিএনপি একটা ‘ভিলেন’। কিছু কিছু লোক বলার চেষ্টা করেন, আমি বিস্মিত হই।”

জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ সফল হয়নি, কারণ জিয়া ক্ষণজন্মা এবং ইতিহাস তাঁকে ধারণ করেছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিডেল কাস্ত্রোর আদালতে দেওয়া বিখ্যাত উক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছেন, তাঁকে কেউ কন্ডেম (তিরস্কার) করলে কিছু যায় আসে না।”

বিএনপি মহাসচিব তারেক রহমানের নেতৃত্ব তুলে ধরে বলেন, “তারেক রহমান আমাদের নেতা, যিনি নতুন করে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার জন্য কাজ করছেন।” চীন সফরের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তারেক রহমান সেই পতাকা তুলে ধরেছেন, যা হলো স্বাধীনতার পতাকা, অধিকারের পতাকা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পতাকা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top