ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের পর এবার উত্তর আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র কানাডাও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল সোমবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এই চাঞ্চল্যকর খবরটি জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কানাডা
গত শুক্রবার প্রচারিত ব্লুমবার্গ পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে সম্মান করেন। কার্নিকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়, নেতানিয়াহু কানাডায় এলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না। জবাবে তিনি নিঃসঙ্কোচে বলেন, “হ্যাঁ”।
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার পরিধি ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকাতেও বিস্তৃত হলো।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির কারণ ব্যাখ্যা করলেন কার্নি
নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারের ঘোষণার পাশাপাশি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া তার সরকারের অগ্রাধিকার—এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন কার্নি। তিনি স্পষ্ট করেন, ইসরায়েলের পাশে শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থাকুক, এটাই কানাডার নীতি।
কার্নি বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে কানাডা যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের নীতি মেনে আসছে, নেতানিয়াহুর সরকার জাতিসংঘের নীতিমালা লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে। এ কারণেই কানাডা এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, যা দেশের দীর্ঘদিনের সরকারি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইসরায়েলের অসন্তোষ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
গত দুই বছরের ইসরায়েলি হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যেখানে নিহত হয়েছে ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
কানাডার আগে ইউরোপের বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, স্লোভেনিয়া ও সুইজারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।
এদিকে, কার্নির এই বক্তব্যের পর নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক পরামর্শক ওফির ফাল্ক কানাডীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, যেহেতু কানাডা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, তাই মার্ক কার্নির উচিত বিশ্বের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশে স্বাগত জানানো।







