শিল্প ও পর্যটননির্ভর ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি ইতালি তাদের শ্রমবাজারের দীর্ঘদিনের জনবল ঘাটতি মেটাতে এক বিশাল উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটি আগামী তিন বছরে মোট পাঁচ লাখ বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, ২৩ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে শুরু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত স্পন্সর ভিসার আবেদন, যা চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কঠোরতা ও প্রযুক্তিনির্ভর হয়েছে আবেদন প্রক্রিয়া
নন-ইউরোপীয় ৩৮টি দেশের নাগরিকরা এই স্পন্সর ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন, যার মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত। তবে ইতালির সরকার এবার আবেদন প্রক্রিয়াকে আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর ও প্রযুক্তিনির্ভর করেছে।
- আবেদনকারীর যোগ্যতা ও নিয়োগকর্তার বৈধতা যাচাই করতে সব ধরনের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করা হবে।
- সঠিক ও বৈধ নিয়োগদাতা (স্পন্সর) ছাড়া কোনো আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৪ লাখ ৫২ হাজার শ্রমিক নেওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে পাঁচ লাখে উন্নীত করার এই সিদ্ধান্ত, ইতালির ভবিষ্যৎ দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত পর্যটন, কৃষি, নির্মাণ ও শিল্প খাতে ইতালিতে ব্যাপক জনবল সংকট তৈরি হয়েছে।
২০২৬ সালের ‘ক্লিক ডে’ এবং প্রবাসীদের সতর্কতা
ইতালিতে কাজের উদ্দেশ্যে আগাম ফরম পূরণ করেছেন এমন ব্যক্তিরা ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত ‘ক্লিক ডে’ তে তাদের মূল আবেদন জমা দিতে পারবেন। ২০২৬ সালের জন্য এই ক্লিক ডে অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি, ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন সকাল ৯টায় নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন জমা দিতে হবে।
ইতালিতে অবস্থানরত প্রবাসীরা আশা করছেন, এবার আবেদন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ডিজিটাল হওয়ায় এবং ঢাকার ভিসা প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশিদের হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। তবে একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে বলেছেন, দালাল চক্রের ফাঁদে না পড়ে কেবল সরাসরি সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করাই হবে নিরাপদ ও সফল উপায়। ইতালিতে কাজের স্বপ্ন দেখা হাজারো বাংলাদেশির জন্য এটি নতুন এক সুযোগ, তবে সফলতার জন্য বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অপরিহার্য।







