মিরপুরে প্রত্যাবর্তন ও রিশাদের ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

সব প্রতিকূলতা জয় করে অবশেষে জয়ের ধারায় ফিরল বাংলাদেশ। নিজেদের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের পুরোনো খারাপ স্মৃতিকে পেছনে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। স্পিনার রিশাদ হোসেনের অবিশ্বাস্য বোলিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে বাংলাদেশ।

পুরোনো উইকেটে সংগ্রাম, হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরি

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর এই প্রথম মিরপুরে ওয়ানডে খেলতে নামে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন পর ঘাসবিহীন কালো মাটির পুরোনো রূপে ফেরা উইকেটটি দুই দলের ব্যাটসম্যানদের জন্যই ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। দলীয় ৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারকে হারিয়ে শুরুতেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

তবে সেই চাপ সামাল দেয় তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন (৩২ রান)তাওহিদ হৃদয়ের (৬৩ বলে ৫১ রান) ধীরগতির ৭১ রানের জুটি। মিডল অর্ডারের ভগ্নদশা সামাল দিতে গিয়ে অভিষেক ম্যাচেও দারুণ খেলেন মাহিদুল ইসলাম (৭৬ বলে ৪৬ রান)। শেষদিকে রিশাদ হোসেনের ১৩ বলে ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ ২০৭ রানের লড়াকু পুঁজি গড়তে সক্ষম হয়।

রিশাদ শো: বাংলাদেশের স্পিন ইতিহাসে রেকর্ড

২০৭ রানের পুঁজি নিয়েও প্রেসবক্সে যখন বাংলাদেশের জয়ের পাল্লা ভারী, তখন সেই অনুমানকে বাস্তবে রূপ দেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তাঁর ঘূর্ণি বিষে বিভ্রান্ত হয়ে মাত্র ৯২ রানেই ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ৫ জন ব্যাটসম্যানকেই ফিরিয়ে এনে তিনি জয়ের ভিত গড়ে দেন।

ইনিংসের ৩৯তম ওভারে গুগলিতে সিলসকে ক্যাচ বানিয়ে রিশাদই দেন ফিনিশিং টাচ। মাত্র ৩৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করে রিশাদ ওয়ানডে ক্রিকেটে কেবল নিজের সেরা পারফরম্যান্সই করেননি, বাংলাদেশের স্পিনারদের মধ্যে এই প্রথম এক ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডও গড়লেন। তাঁর হাত ধরেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ।

পেসারদের শুরু ও উইকেটের চরিত্র

দিনের শুরুতে পেসার তাসকিন আহমেদ এবং বাঁহাতি স্পিনার অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম টানা দুটি মেডেন ওভার করেন। তাসকিনের বাউন্সের পাশাপাশি তানভীরের ওভারেই ইঙ্গিত মেলে, উইকেটে স্পিনারদের জন্য বড় উৎসব অপেক্ষা করছে। যদিও ক্যারিবীয় ওপেনাররা শুরুতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। কিন্তু পঞ্চম ওভারের পর উইকেট বোলারদের এমন বন্ধু হয়ে ওঠে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় বাউন্ডারির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১৩তম ওভার পর্যন্ত।

এরপর রিশাদের স্পিন জাদু, কিসি কার্টি, কিং, রাদারফোর্ড ও চেজের উইকেট তুলে নিয়ে ২০৭ রানের লক্ষ্যকে ক্যারিবীয়দের জন্য পাহাড়সমান করে তোলে। ওয়ানডেতে টানা চার ম্যাচ হারের পর রিশাদের হাত ধরেই বিজয়ের ধারায় ফিরল বাংলাদেশ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top