জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে ২৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই: মার্কিন তহবিল অনিশ্চয়তা ও ২.৮ বিলিয়ন ডলার বকেয়া

অভূতপূর্ব আর্থিক সংকটের মুখে জাতিসংঘ তার বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষী মিশনের বহরে বড় ধরনের কাটছাঁট করতে যাচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সংস্থাটি তার মোট শান্তিরক্ষা সদস্যের অন্তত এক-চতুর্থাংশ (২৫ শতাংশ) হ্রাস করবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তহবিল প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা এবং বকেয়া বিলের পরিমাণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

১৩ থেকে ১৪ হাজার সেনা সদস্য কমানোর পরিকল্পনা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বুধবার (৮ অক্টোবর) জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান নয়টি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষা ও পুলিশ সদস্যকে তাদের সরঞ্জামসহ নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর ফলে মোট ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের আওতায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক কর্মীও পড়বেন।

যে নয়টি মিশনে এই কাটছাঁট কার্যকর হবে তার মধ্যে রয়েছে—দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং সংঘাতপূর্ণ আবইয়েই ও গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চলের মিশনগুলো।

সংকটের কেন্দ্রে মার্কিন বকেয়া: ২.৮ বিলিয়ন ডলার

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র সর্ববৃহৎ অবদানকারী (মোট বাজেটের ২৬ শতাংশেরও বেশি)। তবে সংস্থাটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগে মার্কিন বকেয়া ছিল দেড়শ কোটি ডলার, যা বর্তমানে বেড়ে ২৮০ কোটি ডলার (২.৮ বিলিয়ন ডলার) ছাড়িয়েছে। উল্লেখ্য, এই অর্থ পরিশোধ বাধ্যতামূলক।

সংকট আরও গভীর হয়েছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দ ৮০ কোটি ডলারের শান্তিরক্ষা তহবিল বাতিল করেছেন। হোয়াইট হাউজের বাজেট অফিস এমনকি ২০২৬ সাল থেকে এই তহবিল সম্পূর্ণ বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও জাতিসংঘ আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্র শীঘ্রই ৬৮ কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ করবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এবং সংস্থার ৮০ বছর পূর্তিতে কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যয় সাশ্রয়ের মাধ্যমে পথ খুঁজছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top