গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’: প্রথম ধাপের চুক্তিতে হামাস ও ইসরায়েলের সম্মতি, নেতানিয়াহুর ঘোষণা

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রথম ধাপের একটি চুক্তিতে হামাস এবং ইসরায়েল সম্মত হয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে। এই চুক্তিতে জিম্মি বিনিময় এবং ইসরায়েলি বাহিনীর আংশিক প্রত্যাহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এই ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প ও কাতার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে প্রথম এই অগ্রগতির খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ইসরায়েল এবং হামাস চুক্তির প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে, যার মাধ্যমে বন্দিদের বিনিময় করা হবে এবং ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।

আলোচনার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে, যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপের “সকল বিধান ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া” নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।

হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া

হামাস তাদের এক জন বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এমন একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে, যাতে গাজা যুদ্ধ বন্ধ, দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং বন্দি বিনিময়ের শর্ত রয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, চুক্তির অনুমোদন দিতে তিনি বৃহস্পতিবার তার সরকার প্রধানদের নিয়ে বৈঠক ডাকবেন এবং এটিকে “ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন” বলে অভিহিত করেছেন।

২৪ ঘণ্টার সংঘাত ও বিশাল মানবিক মূল্য

যুদ্ধবিরতির এই আশাব্যঞ্জক খবরের মধ্যেও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৯ জন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের এই যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭,১৯৪ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ১,৬৯,৮৯০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে আরও হাজার হাজার মানুষ। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।

সূত্র- আলজাজিরা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top