ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার

বাণিজ্যই মুখ্য, ভারতের জন্য ভিসা নীতি শিথিল করবে না যুক্তরাজ্য: দিল্লিতে স্টারমারের স্পষ্ট বার্তা

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষে নয়াদিল্লি সফরে এসেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। তবে সফরের শুরুতেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসছে না এবং ভারতের জন্য নতুন কোনো ভিসা নীতি বা শিথিলতা আনা হবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

‘এটা ভিসার বিষয় নয়, এটা বাণিজ্যের বিষয়’

মঙ্গলবার সফরের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্টারমার বলেন, তাঁর সফরের উদ্দেশ্য ভিসা নয়; বরং বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধি। গত সপ্তাহে লেবার পার্টির সম্মেলনে অভিবাসন হ্রাসের কঠোর নীতি ঘোষণা করার পর, স্টারমার বলেন যে তারা অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিশ্বের সেরা প্রতিভাধরদের আকর্ষণ করতে চান, কিন্তু ভারতের জন্য নতুন কোনো ভিসা রুট খোলার পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মেধাবীদের যুক্তরাজ্যে আনতে চাই। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে নতুন ভিসা নীতির কোনো পরিকল্পনা নেই।”

বাণিজ্য চুক্তি: ৩ বছরের কর ছাড়, কিন্তু নীতিতে পরিবর্তন নেই

গত জুলাই মাসে ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তি ব্রিটিশ গাড়ি ও হুইস্কি ভারতে এবং ভারতীয় টেক্সটাইল ও গহনা যুক্তরাজ্যে কম খরচে রপ্তানির পথ খুলে দিয়েছে। চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যে স্বল্পমেয়াদি ভিসায় কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা করের তিন বছরের ছাড় রাখা হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্য সরকার পরিষ্কার জানিয়েছে, এর বাইরে অভিবাসন নীতিতে আর কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না।

স্থবির অর্থনীতিতে গতি আনতে স্টারমার তার এই প্রথম ভারত সফরে একশ জনেরও বেশি উদ্যোক্তা, সংস্কৃতিকর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি বিশাল প্রতিনিধিদল সঙ্গে এনেছেন।

পুতিনকে শুভেচ্ছা নয়, রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ মোকাবিলায় মনোযোগ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এই সফরে বৈঠক করবেন স্টারমার। সফরের আগে মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে স্টারমার রসিকতার ঢঙে বলেন:

“আমি পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠাইনি, ভবিষ্যতেও পাঠাবো না। এতে নিশ্চয়ই অবাক হওয়ার কিছু নেই।”

রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি নিয়ে মোদির সমালোচনা করবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্যের নজর এখন রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর দিকে। তিনি বলেন, এই অনিয়ন্ত্রিত ট্যাংকার বহরটি রাশিয়া থেকে তেল পরিবহন করে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করে, এবং যুক্তরাজ্য এটি মোকাবিলায় নেতৃস্থানীয় দেশ হিসেবে কাজ করছে।

এদিকে, এই সফর ঘিরে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ আগামী বছর দিল্লি-হিথ্রো রুটে তৃতীয় দৈনিক ফ্লাইট এবং ম্যানচেস্টার বিমানবন্দর নতুন করে দিল্লির সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top