লন্ডনে ১৭ বছর নির্বাসিত জীবন যাপন শেষে বিবিসি বাংলাকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় পর কোনো গণমাধ্যমে এই প্রথম সাক্ষাৎকার দিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। আজ সোমবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে দেশে ফেরা, গণমাধ্যমে নীরবতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রত্যাশা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তারেক রহমান। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাদির কল্লোল।
‘কথা বলিনি, ব্যাপারটা ভিন্ন: আদালত আমার কণ্ঠরোধ করেছিল’
দীর্ঘ সময় কেন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি—এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান সরাসরি নীরব থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তিনি প্রবাসজীবনে থেকেও দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
গণমাধ্যমে না আসার মূল কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন:
“আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় আদালত থেকে রীতিমতো একটি আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম, গণমাধ্যম সেটি ছাপাতে পারত না। আমি থেমে থাকিনি। হয়তো আপনারা তখন কথা নিতে পারেননি অথবা শুনতে পারেননি।”
দেশে ফিরবেন দ্রুত, নির্বাচনই লক্ষ্য
গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে ফেরা নিয়ে বারবার আলোচনার কেন্দ্রে থাকা তারেক রহমানের কাছে বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল—তিনি এখনো কেন দেশে ফেরেননি?
জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে ওঠেনি, তবে “সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশা আল্লাহ, দ্রুতই ফিরে আসব।”
আগামী নির্বাচনের আগে দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন:
“রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নির্বাচনের সঙ্গে তো রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক কর্মীর একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। কাজেই যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, জনগণের সঙ্গে জনগণের মধ্যেই থাকব, ইনশা আল্লাহ।”
‘নির্বাচনে অবশ্যই অংশ নেব, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জনগণের’
আগামী নির্বাচনে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের প্রত্যাশী হবেন কি না—এ বিষয়ে সরাসরি জবাব না দিয়ে তারেক রহমান বলেন, যেখানে জনগণের সম্পৃক্ত একটি নির্বাচন হবে, সেখানে তিনি নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন না এবং অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তবে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রত্যাশী হওয়ার সিদ্ধান্তটি কার—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের। এটি তো আমার সিদ্ধান্ত নয়।” বিএনপির পক্ষ থেকে কে প্রার্থী হবেন—এমন প্রশ্নে তারেক রহমান জানান, সেক্ষেত্রে দল সিদ্ধান্ত নেবে।
সূত্র- বিবিস বাংলা