জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেকার আলোচনা চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে মোটাদাগে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের’ দিকে অগ্রসর হওয়া গেছে।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চতুর্থ দিনের আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
জনগণের সার্বভৌম রায় নিশ্চিতে গণভোট অপরিহার্য
সালাহউদ্দিন আহমদ গণভোটের প্রস্তাবের পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে সমগ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব পেতে জনগণের কাছে সম্মতি নেওয়া জরুরি।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছি, অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি—জনগণ তার পক্ষে আছে কি না, গণভোটের মাধ্যমেই হবে জনগণের পক্ষ থেকে এই সনদ বাস্তবায়নের জন্য একটা চূড়ান্ত অভিমত।” তিনি জোর দেন, গণভোটের মাধ্যমে যে জনরায় আসবে, সেটা হবে সার্বভৌম ক্ষমতার একটি রায়। তাই সেই রায় সংসদের যেকোনো সদস্য বা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মানতে বাধ্য থাকবে।
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই, হবে অধ্যাদেশ
বিএনপির এই নেতা গণভোট অনুষ্ঠানের পদ্ধতি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, গণভোটের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। তার মতে, সাবেক সরকার সংবিধানে গণভোটের যে বিধান (আর্টিকেল ১৪২) সরিয়ে দিয়েছিল, তা হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ প্রস্তাব করেন, “একটা অর্ডিন্যান্স জারি করে নির্বাচন কমিশনকে এখতিয়ার দেওয়া যেতে পারে একই দিনে সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি আলাদা ব্যালটে রেফারেন্ডাম (গণভোট) করার জন্য।”
‘নোট অব ডিসেন্ট’ নিয়ে অবস্থান
জুলাই সনদের বিভিন্ন ধারায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (মতভেদ) থাকা প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে সালাহউদ্দিন আহমদ বিষয়টি স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদ প্রণীত হবে এবং দলগুলো এতে অঙ্গীকারনামায় সই করবে। এই সনদ সব দলের ইশতেহারেও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে, ভবিষ্যতে যাঁরা ম্যান্ডেট পাবেন, তাঁরা তাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ অনুসারে অগ্রসর হতে পারবেন।
