‘অনেকেই নিজের আখের গুছিয়েছেন’: উপদেষ্টাদের প্রতি চরম অভিযোগ নাহিদ ইসলামের

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, উপদেষ্টাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করে নিজেদের ‘নিরাপদ প্রস্থান’ (সেফ এক্সিট) নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন এবং অভ্যুত্থানের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

‘কয়েকজন উপদেষ্টাকে বিশ্বাস করাই ছিল অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় ভুল’

সরকার গঠনের এক বছরেরও বেশি সময় পর নাহিদ ইসলামের মন্তব্য, উপদেষ্টা পরিষদে থাকা কয়েকজন ব্যক্তিকে বিশ্বাস করাটা গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। তিনি বলেন, “যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল হয়েছিলো। আমাদের উচিত ছিলো ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া।”

নাহিদ ইসলামের অভিযোগ, নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর যে আস্থা রাখা হয়েছিল, সেই জায়গায় তারা প্রতারিত হয়েছেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সময় আসলে তাদের নামও আমরা উন্মুক্ত করবো।”

‘সেফ এক্সিট’ ও লিয়াজু করে চলছেন উপদেষ্টারা

৮ আগস্ট শপথ গ্রহণের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা শুরু করে। এই উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য নাহিদ ইসলামের অভিযোগ, কিছু উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির বদলে রাজনৈতিক সমর্থন খুঁজছেন।

তিনি বলেন, “অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজু করে ফেলেছে। তারা ‘সেইফ এক্সিটের’ কথা ভাবছে। তারা মনে করছে তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখছে রাজনৈতিক দলগুলোর সাপোর্ট।” তিনি মনে করেন, উপদেষ্টারা যদি রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর না করে দেশের জনগণের ওপর ভরসা রাখতেন, তবে এই ‘বিচ্যুতি’ হতো না। উপদেষ্টাদের নিয়োগের পেছনে ছাত্র-জনতার অবদানই মুখ্য ছিল, কিন্তু কেউ কেউ তা ভুলে গিয়ে রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

ছাত্র নেতৃত্বের অপরিহার্যতা

সরকারে ছাত্রদের উপস্থিতি ঠিক ছিল কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই সরকারের স্থায়িত্বের জন্য অভ্যুত্থানের শক্তির উপস্থিতি ছিল অপরিহার্য। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে এ সরকার তিন মাসও টিকতো না। এ সরকারকে উৎখাত করার, প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা চলমান ছিলো প্রথম ছয় মাস।”

তিনি মন্তব্য করেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠনের বদলে যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করত, তবে এই আক্ষেপ তৈরি হতো না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top