চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার পেছনে ভারত বা ফ্যাসিবাদী শক্তির ইন্ধন রয়েছে—বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলমের এমন অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল এই অভিযোগ নাকচ করে উল্টো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ প্রত্যাখ্যান ভারতের
রণধীর জসওয়াল বলেন, “আমরা এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও শাসন বজায় রাখার সক্ষমতা নেই। আর এই সরকারের একটি অভ্যাস আছে যে তারা তাদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়।”
ভারতীয় এই কূটনীতিক আরও অভিযোগ করেন যে, তথাকথিত উগ্রবাদীরা পাহাড়ি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছে এবং তাদের ভূমি দখল করছে। তিনি ঢাকাকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমি ঢাকাকে বলব নিজেদের আত্মসমালোচনা করুন এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের ওপর উগ্রবাদীদের হামলা ও তাদের জমি দখলের ঘটনা গুরুতরভাবে তদন্ত করুন।”
ঘটনার সূত্রপাত ও মামলার সত্যতা
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক অশান্তি শুরু হয়েছিল গত ২৩ সেপ্টেম্বর। সে সময় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় এক কিশোরীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
যদিও এই মামলাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়, পরবর্তীতে জানা যায় ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকারই হয়নি। মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে একটি ভিত্তিহীন অভিযোগকে কেন্দ্র করে অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে বারবার জানিয়েছে যে, ভারতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম ভারত ও ‘পতিত স্বৈরাচার’কে খাগড়াছড়িতে অশান্তি সৃষ্টির জন্য দায়ী করেন, যা ভারত আজ আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করল।