গাজাগামী ত্রাণবাহী নৌবহরে ইসরায়েলের হামলা, আটক ৩১৭ অ্যাক্টিভিস্ট, একটি ছাড়া বাকি সব জাহাজ আটক

গাজা উপত্যকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আন্তর্জাতিক নৌবহরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলায় অন্তত ৩১৭ জন আন্তর্জাতিক অ্যাক্টিভিস্টকে আটক করা হয়েছে। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজাগামী ৪৪টি ত্রাণবাহী জাহাজের মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সবগুলোকে জব্দ করা হয়েছে।

নৌবহর ও কর্মী আটক

আটককৃত অ্যাক্টিভিস্টরা মোট ৩৭টি দেশের নাগরিক। তাদের মধ্যে স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল, তুরস্ক, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নাগরিক রয়েছেন। তাদের বহনকারী জাহাজগুলোকে বর্তমানে ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, আটককৃতদের সেখান থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, নৌবহরের ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছিল, তবে উপকূল থেকে মাত্র ৯.৩ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই এর সিগন্যাল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

অ্যাক্টিভিস্টদের অভিযোগ

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র আয়োজকরা বলছেন, বহু বছরের ইসরায়েলি অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই তারা গাজামুখী হয়েছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজ ঘিরে ফেলে। অ্যাক্টিভিস্টদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি সেনারা তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ বহরের কাছে পৌঁছে দিক পরিবর্তনের জন্য নির্দেশ দিচ্ছে।

‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা’ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা এখন জায়নিস্ট (ইসরায়েলি) সেনাদের হামলার শিকার। আমাদের জাহাজগুলোকে অবৈধভাবে আটকে দেওয়া হচ্ছে, ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং সামরিক বাহিনী জাহাজে প্রবেশ করেছে।’

প্রাসঙ্গিক তথ্য: গাজার অবরোধ ও মানবিক সংকট

২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার ওপর কঠোর স্থল, জল ও আকাশপথের অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ইসরায়েলের দাবি, নিরাপত্তার কারণে এই অবরোধ অপরিহার্য। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই অবরোধকে অমানবিক এবং গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষের জন্য মানবিক সংকটের কারণ হিসেবে বর্ণনা করে থাকে। এর আগেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী সমুদ্রপথে মানবিক ত্রাণ নিয়ে গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে, তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ইসরায়েলি নৌবাহিনীর বাধার মুখে পড়েছে। এই ঘটনাগুলো প্রায়শই আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

সূত্র- আনাদোলু

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top