আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতার হার বেড়েছে বলে একটি নতুন জরিপে উঠে এসেছে। ইনোভিশন কনসাল্টিং পরিচালিত ‘জনগণের নির্বাচন–ভাবনা’ শীর্ষক জরিপের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় আরকাইভস মিলনায়তনে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন
ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াৎ সারওয়ার জানান, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশের ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটারের ওপর এই জরিপটি চালানো হয়। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্তে ‘হ্যাঁ’ বলা উত্তরদাতার সংখ্যা মার্চ মাসের ৬২% থেকে কমে সেপ্টেম্বরে ৫৭.৮% এ দাঁড়িয়েছে। এই তথ্য ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও সিদ্ধান্তহীনতার ইঙ্গিত দেয়।
দলগত পছন্দের চিত্র
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪ হাজার ৭২১ জন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের পছন্দের দলের কথা প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা গেছে, পছন্দের দলের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিএনপি (৪১.৩%)। এরপরেই রয়েছে জামায়াত (৩০.৩%)। এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৪.১০% ভোটারের পছন্দের তালিকায় আছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সেপ্টেম্বরের জরিপে ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া’ দল আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ১৮.৮% উত্তরদাতা, যা মার্চ মাসের তুলনায় প্রায় ৫% বেশি।
আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে মতভেদ
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত কি না, এ বিষয়ে ভোটারদের মধ্যে প্রায় সমান ভাগে বিভক্ত মতামত দেখা গেছে। জরিপে ৪৬.৭৯% উত্তরদাতা মনে করেন, সব দলের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত। অন্যদিকে, ৪৫.৫৮% উত্তরদাতা মনে করেন, বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে দলটিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।
আওয়ামী লীগ অংশ না নিলে সম্ভাব্য ফলাফল
জরিপ অনুযায়ী, যদি আওয়ামী লীগ আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তবে ভোটের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বিএনপি ও জামায়াত। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে ভোট দিতে চেয়েছেন ৪৫.৬% উত্তরদাতা এবং জামায়াতকে ভোট দিতে চেয়েছেন ৩৩.৫% উত্তরদাতা। এই পরিস্থিতিতে ৮.৩% ভোটার ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।