অভ্যুত্থান কোনো ষড়যন্ত্র নয়, জনগণের বৈধ আন্দোলন, দল হিসেবে আ.লীগের বিচার দাবি নাহিদ ইসলামের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই অভ্যুত্থান কোনো ষড়যন্ত্রের ফল নয়, বরং এটি ছিল জনগণের একটি বৈধ আন্দোলন। তিনি এই ঘটনায় শুধু ব্যক্তি নয়, বরং দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এই ট্রাইব্যুনালে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে।

অভ্যুত্থান: কোনো ষড়যন্ত্র নয়, জনগণের বৈধ আন্দোলন

নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সংঘটিত হয়েছে। এখানে কোনো দেশি বা বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল না।” তিনি আরও বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের সম্পূর্ণ বৈধতা ছিল এবং জনগণ নিজেরাই রাজপথে নেমে জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করে সাফল্য এনেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ অন্যরা বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য

জুলাই অভ্যুত্থানকালে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণার এই সংগঠক বলেন, “আজকে আমার সাক্ষ্য দেওয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি।” তিনি বিশ্বাস করেন, জুলাই মাসে সংঘটিত ঘটনাগুলো শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বরং পৃথিবীর ইতিহাসে একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, যেহেতু শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাই এটি শুধু একজন ব্যক্তির অপরাধ নয়, বরং একটি রাজনৈতিক অপরাধ। এ কারণে তিনি ট্রাইব্যুনালে আবেদন জানাবেন যেন দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনা হয়।

এই মামলার প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান নিশ্চিত করেছেন যে, জুলাইয়ে সাধারণ ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করার নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম তিন দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তার জবানবন্দি শেষ করেছেন।

মামলার বর্তমান অবস্থা

এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর আগে গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন এবং সাবেক আইজিপি মামুনকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top