জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণ এবং শ্রমিক ইস্যুসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করতে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবুসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের ১১ জন প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমির খসরু
বৈঠক শেষে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু দেশি নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও জাতীয় নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি জানান, বিনিয়োগকারীরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের সব সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন।
আমির খসরু বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং শ্রম আইন সংস্কার—এই দুটি বিষয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, এলডিসি উত্তরণের জন্য যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ এবং বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য সহায়ক নয়। তাই তিনি এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
শ্রম আইন ও এলডিসি নিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো এলডিসি উত্তরণ এবং শ্রম আইন সংশোধন। তিনি বলেন, ১২৪টি বিষয়ে আলোচনা হলেও দুটি বিষয়ে তারা একমত হতে পারেননি।
তিনি শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মাত্র ২০ জন শ্রমিক আবেদন করলেই ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে করে কোনো শিল্পে পাঁচ হাজার শ্রমিক থাকলেও সেখানে হাজার হাজার ট্রেড ইউনিয়ন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এর ফলে ‘ঝুট’ ব্যবসা বা যাদের খারাপ উদ্দেশ্য আছে, তারা রাতারাতি হাজার হাজার ট্রেড ইউনিয়ন তৈরি করবে, যা শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলবে। তিনি আরও বলেন, তারা এলডিসি উত্তরণ স্থগিত চান না, বরং এই প্রস্তুতির জন্য আরও সময় চেয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যারা
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএর সভাপতি এমএ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএর মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ।