ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পর্তুগাল। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পর এবার ইউরোপের এই দেশটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি কার্যকর হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মর্যাদা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের একদিন আগে পর্তুগাল এই ঘোষণা দিল। পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে জানায়, “পর্তুগাল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।”
পর্তুগিজ সংবাদপত্র কোরেইও দা মানহা-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির মধ্য-ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টেগ্রো প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন। এর মাধ্যমে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটির পার্লামেন্টে প্রায় ১৫ বছরের বিতর্কের অবসান ঘটল।
আন্তর্জাতিক সমর্থন ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
পর্তুগালের এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন জাতিসংঘের একটি ঐতিহাসিক তদন্তে ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পর্তুগাল সরকার জানায়, “সংঘাতের অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিবর্তন”, মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলের বারবার ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের হুমকির কারণেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর একজন উপদেষ্টা জানান, ফ্রান্সের পাশাপাশি অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা এবং সান মারিনোও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। কানাডা এবং যুক্তরাজ্যও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
বিশ্বের ১৪৭টিরও বেশি দেশ, যা জাতিসংঘের সদস্য দেশের ৭৫ শতাংশ, এর আগে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে, গত শুক্রবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার অনুমতি দিতে যে ভোটাভুটি হয়, পর্তুগালসহ ১৪৫টি দেশ তার পক্ষে ভোট দেয়। অন্যদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ মাত্র পাঁচটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে ‘বেপরোয়া’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, এটি কেবল হামাসের প্রচারণাকেই সমর্থন করবে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গত বছর সতর্ক করে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রতিটি দেশের জন্য ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরে একটি করে নতুন অবৈধ বসতি স্থাপন করবে।
সূত্র- আলজাজিরা