সৌদি আরব ও পারমাণবিক সামর্থ্যসম্পন্ন পাকিস্তান বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রিয়াদে একটি “স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট” (SMDA) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, যা দুই দেশের পুরনো প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত অংশীদারিত্বকে আরও সংহত করছে। এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, যদি কোনো বাহ্যিক হামলা হয় একটি দেশের বিরুদ্ধে, তাহলে সেটি হবে উভয়ের বিরুদ্ধে হামলা — যার ফলে দুই দেশের মিলিত প্রতিরোধ ব্যাবস্থা শক্তিশালী হবে।
কেন “Watershed” বা পরিবর্তনের সময়?
-
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে পরিবর্তনের সময় এটি এসেছে, বিশেষ করে যখন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ, গাজায় যুদ্ধ, এবং কাতারে ইসরায়েলি হামলার পরে উপসর্গ গুলোর কারণে অঞ্চলের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ছে। সৌদি আরব ও পার্শ্ববর্তী যারা দেশগুলো—তাদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টির উপর নির্ভরতার বিষয়ে।
-
চুক্তিটি শুধু প্রতিরক্ষা চুক্তি নয় — এটি একটি রাজনৈতিক সংকেতও, যা বলছে যে সৌদি আরব এখন পাকিস্তানের সঙ্গে তার সম্পর্ককে কেবল অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় বন্ধন নয়, বরং সামরিকভাবেও শক্ত করতে চায়।
চুক্তির মূল উপাদান
-
“যেকোনো আগ্রাসন একটা দেশের বিরুদ্ধে হলে সেটি হবে দুই দেশের বিরুদ্ধে” — এই শর্ত লিখিতভাবে চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
-
সদস্যদের মধ্যে মিলিত প্রতিরোধ (joint deterrence), সামরিক সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্রব্যবস্থা বিনিময় এবং অন্যান্য যুক্ত প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
-
যদিও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি, তবে চুক্তিতে “সব ধরনের প্রতিরক্ষা ও সামরিক সক্ষমতার ব্যবহার”-এর কথা এসেছে, যা বিশ্লেষকরা পারমাণবিক প্রতিরোধের সম্ভাবনার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
ভারত ও অন্যান্য দেশগুলোর প্রভাব
-
ভারত এই চুক্তির দিকে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে, কারণ পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের উত্তেজনা সম্প্রতি বেড়েছে। বহু বিশ্লেষক বলছেন, এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়া ও উপমহাদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক গেমচেঞ্জার হতে পারে।
-
গালফ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ: তারা দেখতে চাইবে যে সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের কোথায় পরিবর্তন হচ্ছে, এবং পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্কের নতুন মাত্রা কতটা অ্যাক্টিভ হবে।
সম্ভাব্য ফলাফল ও চ্যালেঞ্জ
-
এই চুক্তি সৌদি আরবকে নিরাপত্তার একটি নতুন ঘাটি দেবে, বিশেষ করে যখন গালফে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাহ্যিক হামলার ভয় রয়েছে।
-
পাকিস্তানের জন্যও এটি একটিথেকে উত্তোলন হতে পারে, কারণ অর্থনৈতিক সংকট ও অভ্যন্তরীণ চাপের মধ্যে একটি বৃহত্তর নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব দেশকে অতিরিক্ত কভার দিতে পারে।
-
কিন্তু চ্যালেঞ্জ আছে: চুক্তির বাস্তবায়ন, ভারত-پاکستان এবং সৌদি-ইরান সম্পর্কের প্রভাব, পারমাণবিক প্রয়োগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক উদ্বেগ—সবই নজরে রাখার বিষয়।
সূত্র- আলজাজিরা