প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে এই নির্বাচন হবে জাতির নবজন্মের মহোৎসব।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের পথে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা কেবল বাংলাদেশের জন্যই নয়, গোটা বিশ্বের জন্যও এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি জানান, শুরুতে এই কমিশনের ধারণা টিকে থাকবে কি না, তা নিয়ে তিনি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু এখন দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর তার সেই ধারণা বদলে গেছে।
ঐকমত্যের পথে কোনো বিকল্প নেই
ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, জাতির সামনে এখন আর কোনো বিকল্প পথ নেই। যেই পথে আমরা যাত্রা শুরু করেছি, সেই পথ থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এটি ছাত্র-জনতার দেওয়া এক ঐতিহাসিক সুযোগ, যেখান থেকে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে।
তিনি বলেন, “আমরা বারবার বলেছি—ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন হবে। যদি আমরা ঐক্যমতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারি, তাহলে এই নির্বাচন কেবল একটি ভোট নয়, এটি হবে জাতির নবযাত্রা।”
প্রধান উপদেষ্টা সতর্ক করে দেন যে, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিভাজন বা দ্বিমতের কোনো স্থান নেই। তিনি বলেন, যখন আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাবো, তখনই নির্বাচনটি সার্থক হবে।
আলাদিনের প্রদীপের মতো সুযোগ
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে আমাদের হাতে এখন “আলাদিনের প্রদীপের” মতো একটি দুর্লভ সুযোগ এসেছে। তিনি বলেন, এই সুযোগ একবারই আসে এবং এটিকে কাজে লাগিয়ে আমরা পুরো জাতিকে নতুন করে গড়তে পারি।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো স্বৈরাচারের ফিরে আসার সব পথ বন্ধ করা।” এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি রাজনৈতিক নেতাদের ধৈর্য ধরে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নির্বাচনের দিন পর্যন্ত আমাদের কাজ হলো—কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব ছাড়াই উৎসবের পরিবেশ তৈরি করা। আমরা হাইওয়ে তৈরি করে ফেলেছি, এখন শুধু সাইনবোর্ড বসানো বাকি। পথ ঠিক আছে, গন্তব্য পরিষ্কার।”