নির্বাচন বিরোধী কথা বললে রাজনীতি থেকে বাদ পড়ে যাবেন: বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ

যারা আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলবেন, তারা রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বাদ পড়ে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, নির্বাচনের মাঠে যারা বিরোধিতা করবে, তাদের মাঠে থেকেই জবাব দেওয়া হবে। এই ধরনের ব্যক্তিরা রাজনীতি থেকে ‘মাইনাস’ হয়ে যাবে। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যারা যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গী ছিলেন, তাদের সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন। তার মতে, কোনো দলের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা। তবে যারা অযৌক্তিক কারণে নির্বাচন বর্জনের সুযোগ খুঁজবে, তারা নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

নির্বাচন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ভিন্নমত

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন সম্পর্কে তার কোনো শঙ্কা নেই। যদিও কিছু দল বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তবে এটি কেবল তাদের রাজনৈতিক কৌশল। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার মতে, এই নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কোনো জটিলতা চায় না বলে তিনি উল্লেখ করেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমান সরকার সবার ঐকমত্যে গঠিত হয়েছে। যদিও এটি বিএনপির দীর্ঘদিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি পুনর্বহাল হলে তা পরবর্তী নির্বাচনে কার্যকর হতে পারে এবং বর্তমান সরকারের ঘোষিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জুলাই সনদ ও জোটের সম্ভাবনা

সংবিধান ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই সনদে’র কিছু অঙ্গীকার অযৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে। তবে তিনি জানান, বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে কমিশন আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাবে। তিনি সংবিধানকে সর্বোচ্চ হিসেবে বিবেচনা করে বলেন, সংবিধানের উপরে স্থান পাওয়া কোনো বিষয় গ্রহণযোগ্য নয় এবং সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ শুধু ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সম্ভব। এই সংস্কার সংসদ নির্বাচনের পর বাস্তবায়ন করা হবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে।

রাজনৈতিক জোট বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটের কোনো সুযোগ নেই। তবে যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিলেন, তাদের সঙ্গে জোট হতে পারে। কয়েকটি ইসলামি ঘরানার দলের সঙ্গেও আলোচনা চলছে, তবে এটি এখনও চূড়ান্ত নয় বলে তিনি জানান। বিগত আন্দোলনে যারা ছিলেন, তাদের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা আলোচনা শেষে স্পষ্ট হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top