ঢাকার ব্যস্ত বন্দরঘাটে সকালবেলার দৃশ্য—চালভর্তি বস্তা, তৈরি পোশাকের কন্টেইনার, হিমায়িত মাছের ট্রাক সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। যেন বাংলাদেশের মাটির ঘাম আর পরিশ্রম পাড়ি জমাচ্ছে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি এখন রপ্তানি। তৈরি পোশাক তো আছেই, তবে এর বাইরে পাটজাত পণ্য, চামড়া, হিমায়িত মাছ, সিরামিক, আইটি সার্ভিস, ওষুধ, মসলা, এমনকি দেশীয় ফলমূলও ঝড় তুলছে আন্তর্জাতিক বাজারে।
বিশ্বজুড়ে বাঙালি পণ্যের কদর বাড়ছে দিনে দিনে। লন্ডনের বড় সুপারশপে যখন বাংলাদেশি আম “হিমসাগর” বিক্রি হয়, তখন প্রবাসী বাঙালির চোখে পানি এসে যায় গর্বে। ইউরোপের ঘরে ঘরে এখনো পাটের তৈরি ব্যাগ পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে শীর্ষে।
এখন আর রপ্তানির কাজ শুধু বড় ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। যে কেউ বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি করতে পারে—শুধু লাগবে ধৈর্য, পরিশ্রম ও সততা।
রপ্তানি শুরু করতে যেসব জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে:
- ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএন (TIN) সংগ্রহ করুন – এটি আপনার ব্যবসার আনুষ্ঠানিক পরিচয়।
- রপ্তানিকারক হিসেবে নিবন্ধন (ERC) – বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিয়ে বৈদেশিক লেনদেন সহজ করুন।
- বায়ার বা ক্রেতা খুঁজুন – অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (Alibaba, Indiamart, Global Sources, TradeIndia, Exporters.SG, Go4WorldBusiness) কিংবা আন্তর্জাতিক ফেয়ার-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
- স্যাম্পল পাঠান – আপনার প্রোডাক্টের মানের প্রতি আস্থা তৈরি করুন।
- চুক্তি ও পেমেন্ট সিকিউর করুন – এলসি (LC), টিটি (TT) বা বিশ্বস্ত অনলাইন পেমেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করুন।
- শিপমেন্ট ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স – সঠিকভাবে রপ্তানি ডকুমেন্টেশন ও লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন।
💡 হিডেন টেকনিক: অনেক নতুন উদ্যোক্তা ছোট পরিসরে কাজ শুরু করেন — যেমন একটি নির্দিষ্ট নিস প্রোডাক্ট বেছে নেওয়া (যেমন– জুট ব্যাগ, হস্তশিল্প বা ফ্রোজেন ফুডস)। ছোট অর্ডার ডেলিভারির মাধ্যমে বায়ারের আস্থা অর্জন করলে ধীরে ধীরে বড় অর্ডার আসে।