আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের ওপর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আয়োজিত শুনানিকালে রবিবার দুপুরে অপ্রত্যাশিত বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এই শুনানিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি এবং কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে।
হামলার অভিযোগ ও পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ অভিযোগ করেছেন যে, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা এবং তার সঙ্গীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, রুমিন ফারহানা দাবি করেছেন যে আতাউল্লাহ অপরিচিত এবং প্রথমে তিনিই ধাক্কা দিয়েছেন, যার ফলে তার সমর্থকরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
আতাউল্লাহ কর্তৃক প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রুমিন ফারহানা একটি মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং আতাউল্লাহ নিচে পড়ে আছেন, যেখানে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে লাথি ও ঘুষি মারছেন। আতাউল্লাহ বলেন, রুমিন ফারহানা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন এবং তার কর্মীরা এরপর তাকে মারধর করে।
এনসিপির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল হক চৌধুরী অভিযোগ করেন যে, বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়নকে অন্য আসনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করায় রুমিন ফারহানা ও তার সঙ্গীরা তাদের ওপর হামলা করেছে।
রুমিন ফারহানার ভাষ্য
অভিযোগের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, আতাউল্লাহকে তিনি চেনেন না এবং তিনিই প্রথম তাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন নারী হিসেবে প্রথমে ধাক্কা দেওয়ায় তার লোকজন স্বাভাবিকভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। রুমিন ফারহানা আরও অভিযোগ করেন যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী (জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল) দলবল নিয়ে ইসি ভবনে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।
সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার একটি খসড়া তৈরি করেছে ইসি। রুমিন ফারহানা এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছেন, যেখানে বিজয়নগরের মানুষ তাদের ইউনিয়নগুলোকে সদর বিজয়নগরের সঙ্গেই রাখার আবেদন জানিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, এনসিপি এবং রুমিন ফারহানার মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছে, যা দুঃখজনক। তিনি মনে করেন, বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়নের সদর বিজয়নগরের সঙ্গেই থাকা উচিত, কারণ এলাকার লোকজনও তাই চান।