গাজায় ক্ষুধার্ত শিশুদের আর্তনাদ: “আমরা মরতে চাই, যেন জান্নাতে অন্তত খাবার পাই”

গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ চিত্র যেন কল্পনারও বাইরে। সম্প্রতি সেভ দ্য চিলড্রেনের সিনিয়র মিডিয়া ম্যানেজার শাইমা আল-ওবাইদি জানিয়েছেন, শিশুদের কণ্ঠে তিনি শুনেছেন এমনসব কথাবার্তা, যা শুনে হৃদয় ভেঙে যায়।

“গাজার শিশুরা আমাকে বলেছে—ওরা মরতে চায়। কারণ অন্তত জান্নাতে গেলে কিছু খাবার পাবে।” – কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে শাইমার।

তিনি জানান, রমজান মাসের ২ মার্চ তিনি গাজায় ছিলেন। সেদিন হঠাৎ করেই ত্রাণ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে একদিন হঠাৎ লেটুস পাতার দেখা মেলে, মানুষ আনন্দিত হয়—ইফতারে সালাদ বানাবে ভেবে। কিন্তু আনন্দ ছিল ক্ষণস্থায়ী। কয়েক দিনের মধ্যে প্রোটিন, মাংস, ফল ও সবজি শেষ হয়ে যায়। এক মাসের মধ্যেই ময়দা ফুরিয়ে যায়, আর সামান্য যা মেলে তার দাম হয়ে যায় তিনগুণ।

“মানুষ তখন ঘাস, গাছের পাতা খেতে শুরু করে।” – শাইমার কণ্ঠে কাঁপন।
“শিশুরা কাঁদছিল, বলছিল—মৃত্যুই যদি সমাধান হয়, তাহলে তারা মরতে চায়, যেন অন্তত জান্নাতে পেট ভরে খেতে পারে।”

তিনি সতর্ক করেছেন, এই ধারা চলতে থাকলে গাজা দ্রুতই মানবশূন্য হয়ে পড়বে। তার মতে, এ দায় শুধু হামাস বা ইসরায়েলের নয়—বরং সমগ্র বিশ্বের। কারণ পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলো নীরব থেকেছে, প্রতিবাদ করেনি, মৃত্যুর মিছিল থামাতে কিছুই করেনি।

আজ গাজার প্রতিটি শ্বাসই হলো ক্ষুধা, কান্না আর মৃত্যুর প্রতীক্ষা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top