সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুট: জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এল জড়িতদের নাম

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে বিপুল পরিমাণ পাথর লুটের ঘটনায় জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে জড়িত ব্যক্তিদের নাম এবং ১০টি সুপারিশের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণও উঠে এসেছে।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা ও প্রশাসনের অবস্থান

বুধবার বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের কাছে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহ। পদ্মাসন সিংহ বলেন, “প্রতিবেদনটি ডিসি স্যারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।” পরে জেলা প্রশাসক মুরাদ জানান, “প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা যাবে না।”

অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের প্রেক্ষাপট

সারা দেশে মোট ৫১টি পাথর ও বালুর কোয়ারি রয়েছে, যার মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে আছে ৮টি। এছাড়া সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি ও উৎমাছড়িসহ আরও ১০টি স্থানে পাথর আছে, যা মূলত ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে আসে। পরিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর থেকে পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে অবৈধভাবে পাথর লুটপাট ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। সর্বশেষ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর লুট করে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ আগস্ট জেলা প্রশাসন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

লুটের পাথর উদ্ধারে অভিযান

তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা এবং একাধিক সূত্রের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যেখানে কারা এই লুটের সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। এদিকে, লুটের পাথর উদ্ধারে আজও যৌথ বাহিনী ও টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সদর উপজেলায় ৯৫ হাজার ঘনফুট এবং গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top