দুদকের তদন্ত: এনবিআরের ১৭ শীর্ষ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তে তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

তালিকাভুক্ত কর্মকর্তারা:
দুদকের তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৩) এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামানসহ মোট ১৭ জন।

অভিযোগের বিষয়বস্তু:
গত জুলাইয়ে দুদকে জমা হওয়া অভিযোগ অনুযায়ী, কিছু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়:
– করদাতাদের থেকে অতিরিক্ত আদায়কৃত কর ফেরত দিতে গিয়ে ঘুষ দাবি
– মিথ্যা মামলা দিয়ে করদাতাদের হয়রানি
– শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকি দিয়ে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ক্ষতি

আইনি প্রক্রিয়া:
দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর ১৭ নং বিধির আলোকে নির্ধারিত ফরমেটে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে বলা হয়েছে। এই তদন্ত এনবিআরে সাম্প্রতিক অসন্তোষ ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রাসঙ্গিক তথ্য:
গত মে মাসে এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মসূচি ও অসন্তোষ চলছিল। জুন মাসের শেষে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। দুদকের এই তদন্ত রাজস্ব প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দুদক মহাপরিচালক জানান, অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্ত করা হবে এবং প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই তদন্ত রাষ্ট্রীয় রাজস্ব প্রশাসনে দুর্নীতি রোধে একটি সংকেত হিসেবে কাজ করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top