জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরে নতুন এক মাইলফলক অর্জন করেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থাটি ৯৩৭ কোটি টাকা অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জন করেছে, যা বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।
বিমান জানায়, ১৯৭২ সালে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্সটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের সীমিত অবকাঠামো থেকে ধীরে ধীরে আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক এয়ারলাইন্সে পরিণত হয়েছে এটি।
সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের মোট আয় দাঁড়ায় ১১ হাজার ৬৩১ কোটি টাকার বেশি। এর আগের বছর প্রথমবারের মতো আয় ১০ হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৬টি অর্থবছরে মুনাফা করেছে বিমান।
২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে বিমানের মোট পুঞ্জীভূত মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা। ফলে এবারকার রেকর্ড মুনাফা বিমানের স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি সফলতার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বর্তমানে বিমানের বহরে রয়েছে ২১টি উড়োজাহাজ। এর মধ্যে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন। আধুনিক ও জ্বালানি সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার বিমানের শক্তি আরও বাড়িয়েছে। বহর রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা দেশে গড়ে ওঠায় খরচ কমছে, সেবার মান উন্নত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমান পরিবহন করেছে ৩৪ লাখের বেশি যাত্রী ও প্রায় ৪৪ হাজার টন কার্গো। একই সময়ে কেবিন ফ্যাক্টর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ শতাংশে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
এ ছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড হয়েছে। দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, উন্নত ইন-ফ্লাইট সেবা ও বিমানবন্দর কার্যক্রমের আধুনিকায়নের ফলে যাত্রী সন্তুষ্টি বেড়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিমান ধারাবাহিকভাবে প্রশংসনীয় নিরাপত্তা রেকর্ড ধরে রেখেছে।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীর বলেন, “যাত্রীদের আস্থা ও জনপ্রিয়তাই এই রেকর্ড সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি। বহর আধুনিকায়ন, লাভজনক আন্তর্জাতিক রুট চালু এবং উন্নত গ্রাহকসেবার কারণে জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থার ভাবমূর্তি ইতিবাচকভাবে বদলে গেছে।”