এই দেশ সবার, এখানে ধর্ম, জাতি, বর্ণ বা গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না’—এমন মন্তব্য করে দেশের সব নাগরিককে নির্ভয়ে বসবাসের আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। শনিবার বিকেলে রাজধানীর পলাশী মোড়ে জন্মাষ্টমী উৎসব ও মিছিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এই সম্প্রীতির বার্তা দেন। এই অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানও।
দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, “এই দেশের ওপর সব নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে।” হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি।”
সেনাপ্রধান সবাইকে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শত শত বছর ধরে আমরা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি, বাঙালি এবং উপজাতি সবাই মিলে অত্যন্ত শান্তিতে ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছি। আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হবে সেই সম্প্রীতি আমরা সবসময় বজায় রাখব।” তিনি আরও বলেন, “এই দেশ সবার, এদেশে আমরা সবাই শান্তিতে সুন্দরভাবে বসবাস করব।”
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদের এই উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই উৎসব এবং এই ধরনের মিছিল সবসময় জারি থাকবে এবং নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।
অন্য দুই বাহিনীর প্রধানের সম্প্রীতির বার্তা
নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান তার বক্তব্যে বলেন, জন্মাষ্টমী কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি শান্তি, সম্প্রীতি এবং মানবতার এক অনন্য আহ্বান। তিনি বলেন, শ্রীকৃষ্ণের জীবনাদর্শ শুধু অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহসই দেয় না, বরং সমাজে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, সহনশীলতা ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।
বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বড় হয়েছেন এবং তার অনেক হিন্দু ও খ্রিস্টান বন্ধু ছিল, যাদের সঙ্গে এখনো তার যোগাযোগ আছে। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই তারা সম্প্রীতির মধ্যে বড় হয়েছেন এবং কখনো ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ করেননি। তিনি আরও বলেন, দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য ঐক্য অপরিহার্য।