সৌদি আরবে কর্মীদের মজুরি সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (এমএইচআরএসডি)। এখন থেকে কোনো নিয়োগকর্তা কর্মীদের মূল বেতন অযৌক্তিক হারে নির্ধারণ করলে অথবা নির্ধারিত সময়ে বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুদাদ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালিত এই কর্মসূচির আওতায় বেতন প্রদানে তিন মাসের বেশি বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সকল পরিষেবা স্থগিত করা হবে। এই খবর দিয়েছে সৌদি গেজেট।
বেতন বিলম্ব ও অন্যান্য অনিয়মের বিরুদ্ধে সতর্কতা
মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোনো কোম্পানি মুদাদ প্ল্যাটফর্মে একজন কর্মচারীর বেতন অযৌক্তিক বলে বিবেচিত হয়, তাহলে তাকে নিয়মের লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হবে এবং মজুরি সতর্কতা জারি করা হবে। এছাড়াও, একজন কর্মীর মজুরির ৫০ শতাংশের বেশি কর্তন করা হলে বা ৯০ দিনের বেশি সময় ধরে তার মূল মজুরি পরিশোধের তথ্য দেওয়া না হলে সেক্ষেত্রেও কোম্পানির বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করা হবে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, নির্ধারিত ক্ষেত্রগুলোতে মূল মজুরির তথ্য প্রবেশ না করা, বেতন দিতে ব্যর্থ হওয়া অথবা মজুরি বিতরণের কোনো রেকর্ড না থাকাকেও অতিরিক্ত লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে। বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের মজুরি সুরক্ষা ফাইল জমা দিতে ২০ দিনের বেশি বিলম্ব করলে মন্ত্রণালয় তাদের তদারকির জন্য পরিদর্শনের ব্যবস্থা করবে।
বিলম্বিত বেতন পরিশোধের প্রক্রিয়া ও কঠোর শাস্তির বিধান
মজুরি বকেয়া হওয়ার পর মুদাদ প্ল্যাটফর্ম একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া শুরু করে। প্রথমে নিয়োগকর্তাকে একটি স্মরণ বার্তা পাঠানো হয়, এবং ১০ দিন পরে দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যদি ১৫ দিনের মধ্যে কোনো সমাধান না হয়, তাহলে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়। ২০ দিনের মধ্যে কোনো ফাইল জমা না দিলে পরিদর্শনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
মুদাদ আরও জানিয়েছে, নিয়োগকর্তাকে বেতন বিলম্বে পরিশোধের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হবে। কর্মচারীরা তখন সিস্টেমে এই যুক্তি গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে তিন দিন সময় পাবেন। যদি কর্মচারীর কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসে, তবে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়োগকর্তার ব্যাখ্যা গ্রহণ করবে।
মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যে সংস্থাগুলো দুই মাসের জন্য বেতন পরিশোধে বিলম্ব করবে, তাদের ওয়ার্ক পারমিট প্রদান এবং নবায়ন ব্যতীত অন্যান্য সকল পরিষেবা স্থগিত করা হবে। যদি বিলম্ব তিন মাসের বেশি হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সমস্ত পরিষেবা স্থগিত করা হবে। এই পরিস্থিতিতে, পূর্বের নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই কর্মচারীকে নতুন নিয়োগকর্তার কাছে স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হবে।