নির্বাচন কমিশনে ব্যাপক সংস্কার: ‘না’ ভোট, ফল বাতিল ও সশস্ত্র বাহিনীর সংযুক্তি

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে। এসব সংস্কারের মধ্যে রয়েছে ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা, অনিয়মের কারণে পুরো আসনের ফলাফল বাতিল করার ক্ষমতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা। সোমবার (১১ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে মুলতবি থাকা কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ

সংস্কার প্রস্তাব ও মূল পরিবর্তনসমূহ

ইসির সভায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। এই খসড়া প্রস্তাবগুলো আগামী সপ্তাহে অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে পাঠানোর কথা রয়েছে। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে এবং অন্যান্য বাহিনীর মতো সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদেরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োগ করার ক্ষমতা কমিশনের থাকবে।

‘না’ ভোট এবং ফলাফল বাতিলের ক্ষমতা

নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কোনো আসনে একজন মাত্র প্রার্থী থাকলে তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে না; বরং সেখানে ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা থাকবে। এতে ভোটাররা যদি ‘না’ ভোট বেশি দেন, তাহলে সেই প্রার্থীর বিজয় হবে না। এছাড়া, কোনো নির্বাচনে অনিয়ম হলে ইসি চাইলে একটি, দুইটি অথবা পুরো আসনের ফলাফল বাতিল করতে পারবে। এটি কমিশনের ক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা বাড়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

তিনি আরও জানান, যদি দুজন প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পান, তবে লটারির পরিবর্তে সেখানে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান থাকলেও পরে নবম সংসদে তা বাতিল করা হয়েছিল। এবার সেই বিধান ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

জোটগত নির্বাচন এবং অন্যান্য সংস্কার

ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দল নিজেদের মধ্যে জোটবদ্ধভাবে অংশ নিলেও দলগুলোকে নিজ নিজ প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করতে হবে। এছাড়াও, নির্বাচনী আচরণবিধিতে নারী সম্মান সুরক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানানো হয়।

নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৮৪টি দলের মধ্যে ২২টি দলকে প্রাথমিকভাবে বিবেচিত করা হয়েছে এবং তাদের মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলবে। ইসি আরও জানায় যে, ৮৩টি সংসদীয় আসনে সীমানা নির্ধারণে আপত্তি পাওয়া গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top