মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে আগামীকাল সোমবার (১১ আগস্ট) দেশটিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং হালাল খাদ্যসহ নানা খাতে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক ও তিনটি নোট বিনিময় হওয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে ড. ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের জটিলতা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জ্বালানি, বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, রোহিঙ্গা সংকট, কৃষি, হালাল খাদ্য ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৈঠকের পর সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হবে এবং বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এই সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য এমওইউগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জ্বালানি, বিআইআইএসএস ও মালয়েশিয়ার আইএসআইএস-এর মধ্যে চুক্তি, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও মিমোস-এর মধ্যে সমঝোতা এবং এফবিসিসিআই ও এমআইসিসিআই-এর মধ্যে চুক্তি। নোট বিনিময়ের বিষয়গুলো হলো হালাল খাদ্য ব্যবস্থাপনা, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা এবং উচ্চশিক্ষা খাতের উন্নয়ন।
সফরের অংশ হিসেবে ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে। এছাড়া তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ব্যবসায়িক সেমিনারে অংশ নেবেন এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ ছাড়া কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশন, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
ড. ইউনূসের সফরসঙ্গীদের মধ্যে থাকছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ১৩ আগস্ট তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। তার নেতৃত্বে দুই মাসের মাথায় গত বছরের অক্টোবরে আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকায় সফর করেছিলেন, যা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রথম কোনো বিদেশি সরকার প্রধানের সফর ছিল।