বিএনপির মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত, সন্দ্বীপে সক্রিয় মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন

সাগরপাড়ের সবুজ দ্বীপ সন্দ্বীপের সন্তান মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, দীর্ঘদিন বিদেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে দেশে ফিরে এখন নিজ এলাকায় দলীয় কার্যক্রমে ব্যাপক সক্রিয়তা দেখাচ্ছেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে তার মাতৃভূমিতে রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন এবং দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রায় নিশ্চিত খবরকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে।

১৯৬৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন। এখানেই তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৮১ সালে কলেজ ছাত্রদলে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়।

১৯৮৪ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে বহির্বিশ্বে গঠিত প্রথম বিএনপি কমিটিতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির দ্বিতীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান এবং টানা ১৫ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হিসেবে সফলভাবে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া, ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির উত্তর আমেরিকা শাখার সদস্য সচিব ছিলেন তিনি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের মামলা, যেখানে তাকে ০৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলার কারণে তিনি প্রায় ০৯ বছর দেশে ফিরতে পারেননি। সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়েছেন।

জনপ্রিয়তা ও মনোনয়নের ইঙ্গিত

দলীয় ও স্থানীয় সূত্র মতে, দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলেও সন্দ্বীপে তার জনপ্রিয়তা অটুট রয়েছে। স্থানীয় কর্মসূচি, বিজয় র‌্যালি ও বিক্ষোভে তার অংশগ্রহণ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জনগণের মাঝে তার ত্যাগ ও রাজনৈতিক নিপীড়নের ইতিহাস এক ধরনের সহানুভূতি ও সমর্থন তৈরি করেছে। বিএনপি হাইকমান্ডও তাকে আগামী নির্বাচনে সন্দ্বীপ থেকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে বলে জানা গেছে।

অভিজ্ঞতা ও নির্বাচনী সম্ভাবনা

বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তাকে অন্য প্রার্থীদের তুলনায় এগিয়ে রাখছে। ২০২৩ সালে তারেক রহমান তার রাজনৈতিক দক্ষতা ও ত্যাগের জন্য তাকে জাতীয় নেতা হিসেবে ঘোষণা করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে মাঠে নামতে পারলে তিনি আসন্ন নির্বাচনে জয়ের পথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন। তার নেতৃত্বে সন্দ্বীপের রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা তৈরি হয়েছে, যা নির্বাচনের ফলাফলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top