জুলাই আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত ৬ জনকে দাফনের জন্য হস্তান্তর

২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত ছয় জনের মরদেহ দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে এই মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়।

নিহতদের মধ্যে একজন নারী (প্রায় ৩২ বছর বয়সী), বাকি পাঁচজন পুরুষ, যাদের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত এক বছর ধরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিল এসব মরদেহ। এতদিনে তাদের কোনো স্বজন বা পরিচিতজন খোঁজ করতে আসেননি। ফলে অজ্ঞাত হিসেবেই আজ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হচ্ছে।

ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী গোলাম মোখলেসুর রহমান জানিয়েছেন, ৭ থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে মরদেহগুলো হাসপাতালের হিমঘরে আসে। এদের মধ্যে একজন শর্টগানের গুলিতে নিহত হন এবং বাকিদের মৃত্যু হয় ভোতা ধরনের অস্ত্রের আঘাতে। প্রত্যেকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

ডা. মোখলেস জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মরদেহগুলো পুলিশের মাধ্যমে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত এই ছয় জনের ময়নাতদন্ত ও তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আদালতকে সব তথ্য জানানো হয়েছে এবং আদালতের অনুমতি নিয়ে মরদেহগুলো দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রত্যেকটি মরদেহ কবরস্থানে সুনির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে দাফন করা হবে, যেন ভবিষ্যতে ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্ত হলে মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হয়।”

তিনি আরও বলেন, মরদেহ শনাক্তের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও মরদেহগুলোর হাতের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের দাফন কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছয়টি মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে নিয়ে গিয়ে যথাযথ মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মরদেহগুলোর মধ্যে তিনটি যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে, একটি পল্টন থানা এলাকা থেকে এবং বাকি দুটি শাহবাগ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ভবিষ্যতের জন্য প্রত্যেকটির ডিএনএ প্রোফাইল সংরক্ষিত রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top