জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘদিনের সংলাপ শেষে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর নানা মতপার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত এই কমিশন ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হারে, অর্থাৎ অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে মনোনীত করা হবে তাদের।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংলাপের একুশতম দিনে কমিশন এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বিভিন্ন দলের মধ্যে ঐক্যমত্যের অভাব ও মতানৈক্যের কারণে বিষয়টি কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয় এবং তারই ধারাবাহিকতায় এই সুপারিশ উপস্থাপন করে কমিশন।
প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকছে না। তবে যেকোনো বিল—অর্থবিল ব্যতীত—উচ্চকক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। এই কক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না। এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত না হলে সেটি অনুমোদিত হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিম্নকক্ষ থেকে প্রস্তাবিত আইনসমূহ উচ্চকক্ষে পাঠানোর পর তা পর্যালোচনা করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমোদন কিংবা প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত দিতে হবে। যদি উচ্চকক্ষ বিল অনুমোদন করে, তাহলে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য যাবে। আর প্রত্যাখ্যান করলে তা সংশোধনীসহ আবারও নিম্নকক্ষে পাঠানো হবে। নিম্নকক্ষ সেই সংশোধন গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করার স্বাধীনতা রাখবে।
তবে প্রস্তাবিত এই কাঠামো নিয়ে বিরোধিতা করেছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। বিএনপি ও তাদের মিত্র রাজনৈতিক জোটসমূহ উচ্চকক্ষের আসন সংখ্যা নির্ধারণে ভোটের শতকরা হার নয়, বরং আসন সংখ্যাকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়ার দাবি তুলেছে। পাশাপাশি উচ্চকক্ষের ক্ষমতা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে তারা।
অন্যদিকে সিপিবি, বাসদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উচ্চকক্ষ গঠনের বিপক্ষে মত দিয়েছে। তাদের মতে, দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও প্রশাসনিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে আলাদা একটি কক্ষ গঠনের প্রয়োজনীয়তা নেই।